দিলের সাথী আল্লাহ, আমলের সাথী নবীজী : আল্লামা মাসঊদ
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আল্লাহ তাআলাকে দিলের সাথী, নবীজী মুহাম্মদ (সা.)-কে আমলের সাথী বানানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলাকে সবসময় অন্তরে রাখতে হবে এবং নবীজী (সা.)-কে আমলে রাখতে হবে। যদি তুমি সর্বদা আল্লাহকে অন্তরে এবং নবীজীকে আমলে রাখো, তাহলে জান্নাত তোমার জন্য অনিবার্য হবে।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) বাদ এশা জামিয়া কাসিমিয়া দারুল উলুম রংপুর ধনতলা মাদরাসা ময়দানে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা রংপুর জেলা শাখা আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ইসলাহী ইজতেমার ইসলাহী বয়ানে মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.-এর খলীফা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এসব কথা বলেন।
দুরুদ শরীফ নবীজী (সা.)-এর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার অন্যতম মাধ্যম উল্লেখ করে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, দরুদ শরীফ গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। এ আমলের মাধ্যমে একসঙ্গে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। তিনি বলেন, দুরুদ শরীফের মধ্যে একটা সুগন্ধি আছে, এই সুগন্ধি অনুভব করতে হয়।
অন্তরে একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে জায়গা দিতে হবে উল্লেখ করে শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, দুনিয়ামুখী হয়ে, দুনিয়ার প্রেমের পড়ে আমাদের অন্তর পাপের আধিক্যে কালচে হয়ে আছে। অন্তরে দুনিয়ার মহব্বত ঢুকে পড়েছে। আমাদের অন্তর এখন সবকিছু আছে, শুধুমাত্র আল্লাহ নেই। অথচ অন্তরে একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে রাখার কথা ছিল।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ আল্লাহ ও তাঁর নামের জিকির। আল্লাহ নামের জিকিরের স্বাদ, আল্লাহ নামের স্বাদ কখনো কমে না, বরং যত বেশি বেশি করবে ততো স্বাদ বৃদ্ধি পাবে। আল্লার নামের জিকিরে কখনো বিরক্তিও আসে না। যে ব্যক্তি যত বেশি জিকির করবে সে আল্লাহর কাছে ততো প্রিয় হতে থাকবে।
এরআগে উলামায়ে কেরামের খাস মজলিসে নেক এবং এক হয়ে আল্লাহর রহমতের দিকে আসার আহ্বান জানিয়ে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, আল্লাহ তাআলা এই উম্মতকে দুনিয়া ও আখেরাতে কমিয়াব করবেন এবং জয়ী করবেন। তবে আখেরাতে কমিয়াব হতে চাইলে ইখলাসের সাথে আমল করতে হবে। আর দুনিয়াতে জয়ী হতে চাইলে আল্লাহর রহমতের দিকে আসতে হবে, আল্লাহর রহমত পেতে হবে।
তিনি বলেন, আল্লাহর রহমত পেতে হলে দু’টি আমল করতে হবে। ২. নেক হতে হবে। ২. এক হতে হবে। মানুষ যখন এক এবং নেক হয়ে যাবে তখন আল্লাহর রহমত আসবে। মুসলমানরা দুনিয়তে জয়ী হওয়া শুরু করবে। আর এই দু’টি শর্ত সমাজে বাস্তবায়ন করতে নবীজী মুহাম্মদ সা. চারটি কাজ করেছেন। আমাদেরকেও এই চারটি কাজ করতে হবে। ১. দাওয়াত। ২. তালীম। ৩. তাজকিয়া। ৪. মুজাহাদা ফী সাবিলিল্লাহ।
ইসলাহী ইজতেমায় উপস্থিত ছিলেন জামিয়া কাসিমিয়া দারুল উলুম রংপুর ধনতলার মুহতামিম ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা রংপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হোসাইন আহমদ, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার মহাসচিব মাওলানা আব্দুর রহীম কাসেমী, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাইফী, জামিয়া মাদানিয়া আসআদুল উলুম মাদানী নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি ও ইকরা বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন, মাওলানা আবুল কাসেম, মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন, মাওলানা মাসরুর আহমদ, মাওলানা শোয়াইব আহমদ, মাওলানা নাঈমুল ইসলাম, মাওলানা অলিউল্লাহ মাসঊদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকির, মাওলানা তামীম ফরীদী, মাওলানা সালমান আহমদ, মাওলানা ইমরান হোসাইন প্রমুখ।
ইসলাহী বয়ানের পর প্রোগ্রামে আগত মুসল্লীদের মাঝে আগ্রহীরা মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.-এর খলীফা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। বায়আত শেষে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা ও দেশ-জাতি এবং মুসলিম উম্মাহের জন্য শান্তি কামনা করেন তিনি।
গ্রন্থনা : আদিল মাহমুদ