ধর্ষকসহযোগী দুই স্বাস্থ্যকর্মী, কিশোরীর গর্ভপাত
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :: ধর্ষকের সহযোগী দুই স্বস্থ্যকর্মী ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক কিশোরীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে সরকারি হাসপাতালের দুই স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
এ ঘটনায় গত ৮ মার্চ ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ, অপহরণ, জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও সহায়তা করার অপরাধে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মুন্নু ওরফে মুস্তাক, তার ভাই মানিক (৪০), রশিদ (৫৬), শুকুর (৪৯) ও বোন মনোরা খাতুনকে (৩৩) আসামি করা হয়েছে। তবে গর্ভপাতে সহযোগিতাকারী খোকসা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের পরিবার কল্যাণ সহকারী আরেনা খাতুন ভরসা ও খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়ার স্টাফ নার্স শেফালী বেগমকে অজ্ঞাত কারণে এই মামলার আসামি করা হয়নি।
ওই কিশোরীর বাবার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তিনি দুই সন্তান ও পরিবারের খরচ যোগাতে ঢাকায় সিএনজি অটোরিকশা চালান। গত বছরের ২৬ জুলাই ওই কিশোরীর মা জরুরি কাজে তাদের এক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে প্রতিবেশী দুই সন্তানের বাবা মুন্নু ওরফে মুস্তাক (৩০) ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে।
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া ওই কিশোরীর অভিযোগ, ওই দিন ধর্ষণের পর প্রতিবেশী মৃত মতালেব জোয়ার্দ্দারের ছেলে মুন্নু ওরফে মুস্তাক তাকে হুমকী দেয় এই কথা তার বাবা মা বা কারো কাছে বললে তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলা হবে। ভুক্তভোগী কিশোরী বিষয়টি কাউকে বলেছে কিনা মুন্নু সেই খোঁজ খবরও নিতে থাকে এবং নানা হুমকী ধামকী দিয়ে দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
প্রথম দিকে বিষয়টি কিশোরী বা তার পরিবারের লোকজন বুঝতে না পারলেও তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিশ্চিত হতে চলতি মার্চ মাসের ৩ তারিখে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরিবারের সদস্যদের চাপে ওই কিশোরী ঘটনা খুলে বলে। বেরিয়ে আসে রোমহর্ষক কাহিনী।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরদিন ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে তার বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্ত মুন্নু ওরফে মুস্তাক, তার ভাই মানিক (৪০), রশিদ (৫৬), শুকুর (৪৯) ও আসামির বোন মনোরা খাতুন (৩৩)। তুলে নিয়ে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে ওই কিশোরীর গর্ভপাত ঘটান।
এই গর্ভপাতে সহযোগিতা করেন খোকসা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের পরিবার কল্যাণ সহকারী আরেনা খাতুন ভরসা ও খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়ার স্টাফ নার্স শেফালী বেগম। ধর্ষক মুন্নু ওরফে মুস্তাক ও তার ভাইবোনের সঙ্গে আরেনা খাতুন ভরসা ও শেফালী বেগম ২ লাখ টাকার চুক্তিতে ওই কিশোরীর গর্ভপাত ঘটান।