নতুন বাজার সৃষ্টি করে দক্ষ শ্রমিক পাঠান

নতুন বাজার সৃষ্টি করে দক্ষ শ্রমিক পাঠান

নতুন বাজার সৃষ্টি করে দক্ষ শ্রমিক পাঠান

শ্রমিকবান্ধব সিদ্ধান্ত জরুরি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস যে জনশক্তি রপ্তানি তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বিরূপ বিশ্বপরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জনশক্তি রপ্তানিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এর ধাক্কা লাগতে শুরু করেছে আমাদের অর্থনীতিতে। অর্থনীতির সব খাতেই পড়েছে করোনার অভিঘাত। বাদ যায়নি অভিবাসন খাতও। কভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এলেও বৈদেশিক কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে বিপর্যয় নেমেছে। করোনায় শ্রমশক্তির বাজারে খুব বেশি আলোর দেখা পাওয়া যাছে না। যেখানে প্রতিবছর সাত থেকে ১০ লাখ কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতেন, সেখানে করোনার কারণে ২৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কর্মী বিভিন্ন দেশে যেতে পেরেছেন। কর্মী যাওয়ার সংখ্যা শুধু নয়, বিদেশ থেকে কর্মী ফেরত আসার সংখ্যাটাও অন্য বছরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হছে, ছুটিতে নিজ দেশে এসে করোনার কারণে লক্ষাধিক শ্রমিক বিদেশে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। দেশে ফেরত আসা প্রবাসীরাই শুধু সংকটে নন, বিদেশ যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে টাকা জমা দিয়েছিলেন এমন কয়েক লাখ কর্মীও এখন অন্ধকারে। অবশ্য এ মাসের প্রথম ১৫ দিনে কর্মী গেছে প্রায় পাঁচ হাজার। করোনাকালের আগের তুলনায় সংখ্যাটি সামান্য হলেও একে অভিবাসন খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হছে।

আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বাস্তবতায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। অনেক পেশায় আমাদের কর্মীরা কাক্সিক্ষত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। তাই ভালো ও বেশি আয়ের পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ কম। আমাদের নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সঠিক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। করোনাকালে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে। তবে দক্ষ কর্মীর অভাবে বাংলাদেশ এ সম্ভাবনা কতটা কাজে লাগাতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংগত কারণেই আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান।’

সরকার প্রতি উপজেলা থেকে বছরে গড়ে এক হাজার কর্মীকে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি নিশ্চিতরূপেই আশার কথা। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্নদের কদর বাড়ছে। সব কর্মক্ষেত্র সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও দক্ষ জনশক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। শ্রমবাজারের চাহিদার পরিবর্তন ও দক্ষতার দিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি জনশক্তি রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজারও খুঁজে বের করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *