নাগরিকত্ব বিলে স্বাক্ষর করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম :: উত্তাল তরঙ্গ ও পথে পথে খুনোখুনির মধ্য দিয়েই ভারতে নাগরিকত্ব বিলে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে সংঘর্ষে উত্তাল রয়েছে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য। সম্প্রতি দেশটির সংসদের উভয় কক্ষে বিতর্কিত এই বিল পাসকে কেন্দ্র করেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদের সূচনা হয়েছে। কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নামা জনতার সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
এদিকে, এমন উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর নাগরিকত্ব সংশোধনী এই বিল আইনে পরিণত হলো। বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয় এই বিল।
অপরদিকে গত সোমবার লোকসভায় পাস হয়েছিল এই বিল। বিরোধীদের প্রবল বিতর্কের মধ্যেও বিল পাস আটকে রাখা যায়নি। এই সংশোধনী বিল অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈনসহ সংখ্যালঘুরা ভারতে নাগরিকত্বের দাবি জানাতে পারবেন।
লোকসভাতেই বিরোধীদের জবাব দিয়ে অমিত শাহ জানিয়েছেন, ভারতীয় মুসলিমদের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরা সম্মানের সঙ্গেই বাঁচতে পারবেন। বিভেদ তৈরি করার জন্য এই বিল আনা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাজ্যসভা থেকেও বিরোধীদের একই কথা বলেন তিনি। কারণ বিরোধীরা এই বিলকে ঘিরে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন।
অমিত শাহ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান তিনটিই মুসলিম দেশ। ফলে, সেখানে মুসলিমদের সঙ্গে অবিচার হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে, এই বিলে তাদের কথা বলা হয়নি। এর বদলে ওইসব দেশে যারা সংখ্যালঘু তাদের কথা বলা হয়েছে। তবে কোনও মুসলিমের সঙ্গে অবিচার হলে তাদেরও নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই বিল পাস হওয়ার পর থেকেই জ্বলে উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারত। বারবার বিক্ষোভ মিছিল ও গুলি চালানোর ঘটনায় আসামের সর্বত্র প্রবল অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। আসাম সরকার নাগরিকত্ব বিলকে স্বাগত জানানোয় ক্ষোভ আরও তুঙ্গে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল ও বিজেপির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন।
বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়েছে আসাম, ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য। আসাম ও ত্রিপুরার উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে দুই রাজ্যে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।