২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ১০ই রজব, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে নৌ পরিবহন শ্রমিকরা। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে থেমে আছে পণ্য খালাসের কাজ।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) বন্দরের বর্হিনোঙ্গর ও কর্ণফুলী নদীর তীরে থাকা বিভিন্ন লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাসের কাজে যোগ দেননি শ্রমিকরা।
শনিবার দিবাগত রাত থেকে ডাকা ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে নিয়োজিত লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকারসহ প্রায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, “বন্দরে বর্হিনোঙ্গরে থাকা ২২টি বড় জাহাজের পণ্য খালাস চলছিল, কর্মবিরতির কারণে লাইটারেজ শ্রমিকরা আজ কাজে যাননি।”
চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব নৌবন্দরে লাইটার জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান রাখার জন্য পোতাশ্রয় নির্মাণ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে পরীক্ষা কেন্দ্র, নৌ-আদালত স্থাপনসহ ১০ দফা দাবিতে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম বলেন, “১৫ নভেম্বর ১০ দফা দাবি নিয়ে এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। তাই মধ্যরাত থেকে বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সাধারণ শ্রমিকরা। একই সঙ্গে মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।”
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, “সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা বেতন, কর্মরত অবস্থায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, ভারতীয় লাইনে প্রটোকলে ল্যান্ডিং পাস ইস্যুসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘট চলছে। লাইটার জাহাজ, ট্যাংকার, যাত্রীবাহী লঞ্চ এ কর্মবিরতির আওতায় রয়েছে।”
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।