পানি সমস্যা সমাধানে সাভারে তৈরি হচ্ছে বিশেষ কূপ

পানি সমস্যা সমাধানে সাভারে তৈরি হচ্ছে বিশেষ কূপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : পানি নিয়ে রাজধানীবাসির দুর্ভোগ নিত্যদিনের। শুকনো মৌসুমে এর দুর্ভোগ আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। আর তাই রাজধানীর কাছেই সাভারে তৈরি হচ্ছে তেঁতুলঝোড়া-ভাকুর্তা ওয়েল ফিল্ড নামের কূপ। সেখান থেকে দৈনিক ১৫ কোটি লিটার পানি পাবে রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দারা। দেশে প্রথমবারে মতো মাটির নিচের জলাধার থেকে পানিযুক্ত হচ্ছে ঢাকার পানি সরবরাহ নেটওয়ার্কে। ইতোমধ্যে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নে প্রকল্পটির ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ওয়াসার মতে, এই কূপ থেকে পানি উত্তোলনের প্রভাব পড়বে না ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ারে।

নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, এই প্রকল্পটি নিয়ে ৩০ বছরের পরিকল্পনা করেছি আমরা। এই উৎস থেকে ৬০ শতাংশ পানি নেয়া হবে আর বাকি ৪০ শতাংশ উত্তোলন করা হবে না। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে এখানে আমরা কিছু নলকূপও স্থাপন করছি। কয়েক বছর যাবত শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা শহরের অনেক এলাকাতে পানি সংকট দেখা দেয়। ওয়াসা জানায় প্রতিবছর পানির স্তর নেমে যাওয়ায় মাটির নিচ থেকে পানি তোলা সম্ভব হয় না। এ সমস্যা দূর করতে ওয়াসা যখন পানির উৎস নির্বাচন নিয়ে গলদঘর্ম তখনই সন্ধান পাওয়া যায় একটি প্রাকৃতিক জলাধারের। ২০০৬ সালে গবেষকরা সন্ধান পান হিমালয় থেকে মাটির নিচ দিয়ে বয়ে চলা পানির একটি ধারা রাজধানীর অদূরে সাভারেই তৈরি করেছে একটি সুবিশাল জলাধার। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ও কোরিয়া সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি তোলার জন্য প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

ওয়াসা জানায়, মোট ৪২ কিলোমিটারের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৯ কিলোমিটার পাইপ বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে সরবরাহের পরিধি। নদী বা অন্য মুক্ত জলাশয় এবং গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি তোলা হলেও এ ধরনের প্রাকৃতিক উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা হবে এবারই প্রথম। কূপ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এখান থেকে পানি তুলে প্রতিদিন ঢাকায় ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হবে। আমরা আশা করছি আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই আমরা মিরপুর পর্যন্ত এই প্রকল্পের পানি পৌঁছাতে পারব। প্রকল্পটির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্প ১-এ উত্তোলিত পানি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান অনুযায়ী সরবরাহ করতে ল্যাবরেটরিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণও শেষ পর্যায়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *