বইমেলা দখলের আহ্বান নিতান্তই মূর্খতা

বইমেলা দখলের আহ্বান নিতান্তই মূর্খতা

বইমেলা দখলের আহ্বান নিতান্তই মূর্খতা

সীমান্ত হায়দার :: তরুণ লেখে না। মহড়া দেয়। কিশোর পড়ে না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়। নিজের স্ট্যাটাসের খবর না থাকলেও, নিজের পড়াশোনার চাপ অনুভব না করলেও অন্যের বিষয়ে ভালোই নাক গলায়। হুমায়ুন আজাদ লিখেছেন, পতিতারাই এখন বিখ্যাত। এটা যেনো কারও কারও জীবনে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। অখাদ্য কুখাদ্য লিখে মহড়া দিয়ে মানুষকে খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা চালালে তো আর লেখক হওয়া যায় না।

একটা ভালো বইয়ের গা গতরে একটু চোখ বুলালেই বুঝা যায় ভেতরে কী আছে? কিনতু একজন আলেম যখন যাচ্ছেতাই শিরোনামে বই লিখেন, শুধু মেলা উপলক্ষে একটা কিছু বের করতে হবে বলে বই করেন- তা দিয়ে কি বাংলা সাহিত্যের মাঠ দখল করা সম্ভব?

সাহিত্যের কত কত ধারা? এসব ধারায় কি মাদরাসায় পড়ুয়া তারুণ্য লিখতে পারছে? কই? পত্রিকার পাতাগুলোতেও তো সেরকম উপস্থিতি নেই। কিনতু এত অহংকার কেন? কাজের খবর নেই, লেখার খবর নেই, সাহিত্য নির্মাণের প্রচেষ্টা নেই, মহড়ামানসিকতা যতটা নিচে আছে কওমী অঙ্গনের লেখকেরা তারচেয়ে যে আরও নিচে চলে যাবে তা হলফ করেই বলা যায়।

কওমী অঙ্গনের লেখকদের ধৈর্য হারালে সব হারাবে বলেই আমি মনে করি। লেখার মানে এগিয়ে যেতে না পারলে সাহিত্য পাঠে অন্যকে বাধ্য করার মতো ক্ষমতা তৈরী না হলে স্বাভাবিক যাত্রায় বাংলা সাহিত্যে তারা আগের মতোই থেকে যাবে।

আজকাল তরুণরা লিখছে। একটা কথা বলে রাখি, তরুণরা কিন্তু নিজেকে নির্মাণের জন্য লিখছে না। নিজেকে উতরানোর জন্য লিখছে না। অন্যের কাছে গিয়ে নিজের লেখাটা যাচাইও করছে না। কোনো পরামর্শ দিলে তা আরও ফ্লাশ করে দিচ্ছে-এমন ইচড়েপাকা লেখিয়েদের নিয়ে আগামীর পথ নির্মাণে অতটা আশা করাটা খুবই পাগলামী বটে।

আফসোস ও অনুতপ্তের বিষয় হলো, ফেসবুকে তারাই বড় বড় কথা বলছে যারা মূলত লেখায় তেমন কোনো দখলই রাখেন না। এটা যে প্রকৃত তরুণ লেখকদের মনোযোগ নষ্ট হয় তা-ও বুঝেন না।

বইমেলা নয় সাহিত্য পাঠে, সাহিত্য নির্মাণে, সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় ভরপুর কাজই পারে কওমী তরুণদের এগিয়ে দিতে। অতি বাড়াবাড়ি ক্ষতি টেনে আনে সবাই জানে। কাজের খবর না রেখে ভিন্নচোখে নিজেদের রাজা ভাবে মদ্যপ লোকেরাই। একজন তরুণ নিজেকে সাহসী লেখক তৈরী করবেন-এটাই হওয়া উচিত একমাত্র ভাবনা।

লেখক : গল্পকার

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *