পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে/ জ্বলন্ত ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে, নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায়/ তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা। -কবি শামসুর রাহমান
পৌষের প্রথম সকাল। চারিদিকে মিঠে রোদের আলো উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। দূর থেকে ভেসে আসছে- ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা’। দিনটি ১৬ ডিসেম্বর। ৪৮ বছর আগে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই ১৬ ডিসেম্বরে এসেছিল বাংলার স্বাধীনতা। এই দেশে উদিত হয়েছিল নতুন এক সূর্য। সে সূর্য কিরণে লেগে ছিল রক্ত দিয়ে অর্জিত বিজয়ের রঙ। সেই রক্তের রঙ সবুজ বাংলায় মিশে তৈরি করেছিল বাংলার লাল সবুজ পতাকা।
রাজধানীর জামিআ ইকরা বাংলাদেশ মিলনায়তনে একঝাঁক মাদরাসা ছাত্র উন্মুখ হয়ে বসে আছে আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরাম আয়োজিত- মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনবে বলে। যথাসময়ে ডায়াসে উপস্থিত হলেন ইকরা বাংলাদেশ স্কুলের একাডেমিক প্রধান জনাব মিজানুর রহমান। তিনি শুনালেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধুর প্রিয়ভাজন তার পিতার সংগ্রামের কাহিনি, কিশোর বয়সে দেখা মুক্তিযুদ্ধ, পরিবারের আত্মত্যাগ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে বন্দী পিতার উপর অত্যাচারের স্মৃতি।
একে একে ডায়াসে এসে আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরামের সেক্রেটারি জনাব রাশেদুল আলম মোল্লা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সালাম, অর্থ সম্পাদক শোয়াইব আহমদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ নাঈমুল ইসলামের মুক্তিযুদ্ধের নানান বিষয় নিয়ে আলোচনার পর আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরামের প্রেসিডেন্ট মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন ডায়াসে আসেন। তিনি আলোচনা করলেন মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আশির দশক থেকে কওমি মাদরাসার ছাত্রদের মাঝে যে প্রোপাগাণ্ডা চালু আছে, তা নিয়ে এবং আল্লামা কাজী মুতাসীম বিল্লাহ (রহ.) ও আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এই দুইজন মহান ব্যক্তিত্ব কওমি মাদরাসার মধ্যে সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করার অবদান। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে তাদের অবদানকে তুলে ধরেন নতুন প্রজন্মের কাছে আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরামের প্রেসিডেন্ট।
জয়েন্ট সেক্রেটারী জাওয়াদুল করিমের সঞ্চালনায় গভীর আবেগে তন্ময় হয়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। এ এক নতুন দৃশ্য, নতুন দিন, নতুন বাংলাদেশ।