বিশ্বের খ্যাতিমান অধিনকায়কদের ছাড়িয়ে মাশরাফি

বিশ্বের খ্যাতিমান অধিনকায়কদের ছাড়িয়ে মাশরাফি

বিশ্বের খ্যাতিমান অধিনকায়কদের ছাড়িয়ে মাশরাফি

পাথেয় রিপোর্ট : বাংলাদেশের নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত আস্থার প্রতীক মাশরাফি বিন মুর্তজা নিজের পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলেও একের পর এক ম্যাচ জিতিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। নিজেও উঠে গেছেন দারুণ এক তালিকায়। বিশ্বের খ্যাতিমান অধিনকায়কদের ছাড়িয়ে গেছেন তিন। দলগত পারফরম্যান্স চোখ ধাঁধানো। তার নেতৃত্বে বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচ খেলে তিনটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়েছে।

সোমবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মাশরাফির নেতৃত্বে ৬২ রানে জয় পেয়েছেন টাইগাররা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। গ্রেট অধিনায়কদেরও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

নিযুত ক্রিকেটভক্তের বিশ্বাস- মাশরাফির নেতৃত্বেই বাংলাদেশ জিততে শিখেছে। তার জাদুকরী নেতৃত্বে কেবল ছোট দল কেন, বড় দলগুলোর বিপক্ষেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপেই দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছেন টাইগাররা।

মাশরাফির নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। ৮৩ ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। যেখানে জিতেছেন ৪৭ ম্যাচে, হেরেছেন ৩৪ ম্যাচে আর পরিত্যক্ত হয়েছে দুটি ম্যাচ। জয়ের হার ৫৮.০২ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচ জয়ের (শতাংশের বিচারে) দিক দিয়ে টাইগার অধিনায়ক পেছনে ফেলেছেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা, পাকিস্তানের কিংবদন্তি অধিনায়ক ইমরান খান, ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলি, মোহাম্মদ আজাহারউদ্দিন, নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন ফ্লেমিংকেও।
মাশরাফি ২০১০ সাল থেকে চলতি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ পর্যন্ত ৮৩ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেখানে জয়ের হার ৫৮.০২ শতাংশ। ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান জিতেছিল ৫৫.৯২ শতাংশ ম্যাচে, স্টিফেন ফ্লেমিং জিতিয়েছেন ৪৮ শতাংশ ম্যাচ। এখানেই কিংবদন্তিদের ছাড়িয়ে অবস্থান করছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি।

আর বিশ্বকাপে টাইগারদের ১২ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে মাশরাফি জিতেছেন ছয় ম্যাচে। জয়ের হার সেখানে ৫০ শতাংশ।

এর আগে অধিনায়ক মাশরাফি লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমে টপকে যান ইংলিশদের সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে। টানা ৪১ ওয়ানডে ম্যাচে ইংলিশদের অধিনায়কত্ব করেছেন কুক। আর অধিনায়ক হিসাবে সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে সেদিন কুকের পাশে বসেছিলেন মাশরাফি।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেই কুককে টপকে ২১ নম্বরে থাকা সাবেক অজি অধিনায়ক অ্যান্থনি টেইলরের পাশে বসেন। ১৯৯৪ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ১৯৯৬ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত অ্যান্থনি টানা ৪২ ওয়ানডে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। লাল-সবুজের জার্সিতে ২০১৭ সালের ১৭ মে থেকে আফগানিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত টানা ৪৩ ম্যাচে নেতৃত্ব দিলেন অধিনায়ক মাশরাফি।

মাঠে ও মাঠের বাইরে মাশরাফির নেতৃত্বের প্রশংসা সর্বত্র। এই বিশ্বকাপের শুরুতেই তাকে সবার সেরা অধিনায়ক আখ্যা দিয়েছিলেন অনেক গ্রেট।
মাশরাফির সামনে বয়সটাই মূল বাধা। এই বাধা না থাকলে তিনি আরও বহু ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে জয়রথ সেটি থামবে হয়তো নড়াইল এক্সপ্রেসের বয়স বাধার কারণেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *