২৬শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ৩রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ ফজর বাংলাদেশের মাওলানা জিয়াউল হকের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ইজতেমার মুরুব্বী শহিদুল ইসলাম জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আগামী রবিবার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব। এই তিনদিন তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিরা আখলাক, ঈমান ও আমলের ওপর বয়ান করবেন।
ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, ১৬০ একর আয়তনের বিশাল প্যান্ডেলের কোথাও ঠাঁই নেই। ময়দানে জায়গা না পেয়ে অনেক মুসল্লি সড়ক ও ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। এর পরও শীত উপেক্ষা করে মুসল্লির ঢল অব্যাহত রয়েছে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আজ (১৩ জানুয়ারি) শুরু হয়ে রবিবার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বে মাওলানা যোবায়েরের অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারী মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।
২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর (২০২১ ও ২০২২ সাল) ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি।
আজ দেশের অন্যতম বৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে। রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি এবারের নামাজে শরিক হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেকে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অবস্থান নিচ্ছেন।
ইজতেমা মাঠের মুরব্বি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর নূর জানান, পুরো ইজতেমা ময়দানকে মুরব্বিদের পরামর্শে সাজানো হয়েছে। ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের অবস্থান, রান্না করার স্থান, টয়লেট, অজুখানা, গোসলখানা—সবই সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।
ইজতেমা উপলক্ষে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৪০টি দেশের প্রায় দুই হাজার বিদেশি মেহমান এসে পৌঁছেছেন। আরো কয়েক হাজার বিদেশ মুসল্লি আসার পথে রয়েছেন। ইজতেমা ময়দানে তাঁদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুতে তাঁরা অবস্থান নেবেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির আলাদা নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠে বসানো গভীর নলকূপ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে মুসল্লিদের অজু, পয়োনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। দিনরাত বর্জ্য অপসারণ করা হবে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকার সিনেমা হলগুলো বন্ধ এবং দেয়ালের অশ্লীল পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে।
টঙ্গীর মন্নুনগর এলাকায় বিশ্ব ইজতেমার মুসল্লিদের জন্য গতকাল থেকে হামদর্দ, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, গাজীপুর সিভিল সার্জন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ইউনানি হারবাল মেডিক্যাল সোসাইটি, যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন, শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জনকল্যাণ ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, ইবনে সিনা, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা শুরু করেছে।