১৪ই আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ১৫ই মহর্রম, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে ভারতের মুসলমানদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। বুধবার (২১ জুলাই) আসামের গুয়াহাটিতে এক অনুষ্ঠানে এমন আশ্বাস দেন তিনি।
এর কয়েকদিন আগেও মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ভারতীয় মুসলমানরা বিপদে আছেন এমন একটা বক্তব্যের ফাঁদ তৈরি করা হচ্ছে। মুসলিমরা যেন তাতে পা না দেন। এবার ফের মুসলমানদের আশ্বস্ত করতে দেখা গেল তাকে।
আজ মোহন ভাগবত বলেন, ‘সিএএ-এনআরসি কোনো ভারতীয় নাগরিকেরই বিরুদ্ধে তৈরি করা আইন নয়। ভারতের মুসলিম নাগরিকরা সিএএ থেকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে এই দুই বিষয়কে হিন্দু-মুসলিমের বিষয় করে তোলা হয়েছে। এটা আদৌ হিন্দু-মুসলিমের ব্যাপারই নয়।’
তিনি এনআরসি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি দেশের নাগরিকদের চিহ্নিত করার জন্য একটি প্রক্রিয়া। কোনো ধর্মেরই বিরুদ্ধে তা নয়।’
বুধবার (২১ জুলাই) ‘সিটিজেনশিপ ডিবেট ওভার এনআরসি অ্যান্ড সিএএ : আসাম অ্যান্ড দ্য পলিটিক্স অব হিস্ট্রি’ নামে একটি বইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মোহন ভাগবত। এ সময় মঞ্চে ছিলেন আসামের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও। সেখানেই বর্ষীয়ান এই আরএসএস নেতা বলেন, ‘দেশভাগের পর থেকেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল ভারত।’
সেই প্রসঙ্গ তুলেই পাকিস্তানকে এক হাত নেন তিনি। বলেন, ‘আমরা সেটা আজও মেনে চলি। কিন্তু পাকিস্তান মানেনি। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় সবাই সপ্ন দেখেছিল স্বাধীন দেশের। দেশভাগের সময় দেশের মানুষদের অনুমতি নেয়া হয়নি। সবার মতামত নিলে সেই সময় দেশভাগ হতোই না। কিন্তু তবুও নেতারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর দেশের মানুষ মেনে নিয়েছিলেন। দেশের বহু মানুষকে ঘর ছাড়তে হয়েছিল। তারা আজও ঘরছাড়া। তাদের দোষ কী ছিল? তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক কর্তব্য।’
এরপর সবাইকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘কোনো ধর্ম কিংবা ভাষা নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যখনই কেউ বিভেদ তৈরি করতে চায় তখনই সমস্যা শুরু হয়।’
সেই সঙ্গে তার সাফ কথা, ‘অন্যদের থেকে আমরা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র শিখব না। এটা আমাদের পরম্পরা ও রক্তের মধ্যেই মিশে রয়েছে।’