‘ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা তাদের নিজস্ব ব্যাপার’

‘ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা তাদের নিজস্ব ব্যাপার’

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে ঘোষণা দিয়েছে, বিষয়টি তাদের নিজস্ব ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার (৩১ মে) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশ ও আমাদের প্রতিক্রিয়া জানতে এসেছিলেন তিনি। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন যে, কাউকে উদ্দেশ্য করে এই ভিসানীতি করা হয়নি। নির্বাচন যাতে সুন্দর হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই নীতি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ভিসানীতি যার যার দেশের একটি নিজস্ব ব্যাপার। সেই দেশে কাকে ঢুকতে দেওয়া হবে, কী দেওয়া হবে না, সেটি সেই দেশই জানে। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। ভিসা সম্পর্কে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যে ঘোষণা দিয়েছে, এটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।’

‘আমরাও বিশ্বাস করি, একটি সুন্দর নির্বাচন হবে। কোনো ষড়যন্ত্র না, কোনো ধরনের মাসেলম্যানের অভ্যুত্থান না, কিংবা বন্দুকের নল না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই একটি নির্বাচন হোক, আমরাও সেটি চাই। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, আওয়ামী লীগ কখনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে বিশ্বাস করি। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি দিয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। পাশাপাশি আমরা যে একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চাই, তাতে যে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

‘সঙ্গত কারণেই তার (পিটার হাস) নিরাপত্তার প্রশ্নটি এসেছে। সড়কে চলাচলে হঠাৎ করে কেন তার নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে, তিনি সেই প্রশ্ন তুলেছেন। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা সিস্টেমটি পরিবর্তন করেছি। আজ পিটার হাসকে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছি। আমরা কূটনৈতিক পাড়ায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি হতে দেব না। কূটনৈতিক পাড়া ও কূটনীতিকদের চলাচল যাতে নিরাপদ থাকে; সেই ব্যবস্থা আমরা করব। সেজন্য আমরা কাজ করছি।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত কোন কোন বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তাকে সড়কে নিরাপত্তা দেওয়া হতো, সেটি সম্পর্কে তিনি জানতে চেয়েছেন কেন তা প্রত্যাহার করা হলো। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত এরকমই নিয়েছি যে, যেসব দূতাবাস মনে করে সড়কে তাদের (কূটনীতিক) নিরাপত্তার দরকার আছে, আমরা তাদের সড়কে নিরাপত্তা দেব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে আমরা সব দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদের উত্থানের সময় যেসব রাষ্ট্রদূতকে আমরা নিরাপত্তা দিতাম, একইভাবে একই পর্যায়ে সবাইকে নিরাপত্তা দেব। আমরা আবারও বলেছি, কূটনৈতিক পাড়া, তাদের চলাচল ও বিদেশিদের নিরাপত্তা দেওয়ার কর্তব্য হলো আমাদের। তাদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে চলাচলের বিষয়ে আমরা সবসময় সতর্ক আছি। আমাদের অঙ্গীকার হলো, সব রাষ্ট্রদূত যাতে নিশ্চিন্তে নিরাপদে থাকেন, তার ব্যবস্থা করা।’

আনসার গার্ড রেজিমেন্টের মাধ্যমে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেটি তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কিছু সময় চেয়েছেন। আমরা যাদের মাধ্যমে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব, তারা সুপ্রশিক্ষিত। কাজেই তাদের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রদূতরা নির্বিঘ্নে থাকতে পারবেন।’

অর্থ খরচ করে নিরাপত্তা নিতে রাষ্ট্রদূতরা এখন পর্যন্ত আবেদন করেছেন কি না? এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা মৌখিকভাবে আবেদন করেছেন। আমরাও তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমরা আবারও কথা বলব ও বসব। যদি আমরা মনে করি, কোনো জায়গায় আপনাদের নিরাপত্তার অভাব আছে, আমরা সেটির ব্যবস্থা করব।’

রাষ্ট্রদূতরা অর্থ খরচ করে নিরাপত্তা নিতে পারবেন, এখন বললেন, তারা আবেদন করেছেন। তাহলে কোন কোন দেশ আবেদন করেছে? এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো দেশই অনিচ্ছার কথা বলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, হঠাৎ করে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, হঠাৎ করে উঠিয়ে নেওয়া হয়নি। সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপ্রশিক্ষিত একটি বাহিনী তৈরি করেছি, সেটিই তাদের সুরক্ষায় থাকবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাদের হয়তো একটু বোঝার ভুল ছিল, সেটি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি। তারা বলেছেন, আমাদের কিছু সময় দেন। আমরা বলেছি, সবসময়েই আপনাদের নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা সচেষ্ট আছি। আপনারা যে আবেদন করেছেন, তা আমরা দেখব। কোনোখানে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে কি না; তা দেখে আপনাদের জানাব।’

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে পিটার হাসের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়। তাদের সিদ্ধান্ত তো আমাদের জানা নেই। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ দেশের মানুষ খুবই খুশি। তারা ভালো আছে। তারা দেশকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *