মুজিব বর্ষে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আরও মজবুত হোক
আমিনুল ইসলাম :: কোটি কোটি বাঙালির গর্ব, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশত বর্ষ আর কদিন পরেই। এক নতুন উৎসাহ – উদ্দীপনা নিয়েই পালিত হবে। বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে বহু চড়াই- উৎরাই পেরিয়ে, লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্ত মাখা এই দেশ এগিয়ে চলেছে। এদেশের পরতে পরতে শহীদানের রক্ত মিশে আছে। আজো সেই শহীদের রক্তের গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে।
আজো যেন বাতাসে ভেসে বেড়ায় বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ, এবারের সংগ্রাম- স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম – মুক্তির সংগ্রাম।
এখনো মনে হয়, বঙ্গবন্ধুর সেই দরাজ কণ্ঠ বাঙালী জাতির কানে বারবার বেজে ওঠে। ইতিহাসের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সংগ্রামী ভাষণ ছিল রেসকোর্স ময়দানের ভাষণ। যে বক্তৃতার কোন তুলনা নেই আজো। যে ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তি দিয়েছিল। যে বক্তৃতা এদেশের মানুষকে নতুন স্বপ্ন দেখায়ে ছিল।
বাঙালি জাতি শৌর্যে- বীর্যে সেরা জাতি। কস্মিনকালেও কারো সামনে মাথা নত করেনি। বীরের জাতি আমরা। ঠিক বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই বীরের জাতির লিডার। এরকম সাহসী লিডার আর হয়ত জন্ম নেয়নি এই বাংলাদেশে।
৪৭ সালের আগে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, বায়ান্ন এর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তর এর গণ অভ্যূথ্যান, সব সময় বাঙালিরা ছিল আপোসহীন। কাউকে পরোয়া করেনি কখনো। সিংহের মত গর্জে উঠেছিল এদেশের মানুষ স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে। জালিম শাহীর মসনদকে প্রকম্পিত করেছিল বাঙালিরা।
১৯৭১ সনে পাক বাহিনী যখন এদেশের মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন চালায়, এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে, লক্ষ লক্ষ মা- বোনদের ধর্ষন করে, ঠিক সেই সময়ে জালেমের জুলুমের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে ছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর এদেশে লক্ষ- কোটি মানুষ বঙ্গবন্ধুর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ছিলেন। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাক- হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রাণ-পণ যুদ্ধ করে এদেশকে মুক্ত করে ছিলেন। আমরা একটি স্বাধীন ভুখণ্ড পেয়েছিলাম।
স্বাধীনতার যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর এই নেতৃত্ব। জাতির জনকের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ত্যাগ, পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরনীয় হয়ে থাকবে চিরদিন। এই পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে স্হান করে নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর এই সাহসী নেতৃত্ব, দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর কোরবানী বিশ্বময় খ্যাতি লাভ করেছে।
জাতির জনকের এই দেশ মাতৃকার এই অবদান বিশ্ববাসী সামনে জ্বল জ্বল করছে। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালী জাতির হৃদয় জয় করেননি। তিনি বিশ্ববাসির মন জয় করেছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধু বিশ্বনেতা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন।
শুধু একদিন দুদিন নয়, এক বছর দু বছর নয়, শত শত বছর ধরে এই জাতি, এই বিশ্ব, স্মরণ করবে বঙ্গবন্ধুকে। এদেশের মাটি মানুষ মনে রাখবে তাঁকে।
” বাংলাদেশ রবে যতদিন- বঙ্গবন্ধুর কীর্তি রবে ততদিন”
সেই মহান নেতার জন্মশত বার্ষিকী। বিষয়টি কিন্তু অনেক গুরুত্ব বহন করে। বঙ্গবন্ধুর মত নেতার নাম, যাকে মুজিববর্ষ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই বর্ষ থেকে নতুন করে শপথ নিতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধুর যেরকম ছিল দেশ প্রেম,দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা, ত্যাগ- কোরবানী, ঠিক আমাদেরও চাই, দেশের প্রতি টান, দেশের জন্য ত্যাগ। দেশকে অসম্ভব ভালবাসতে হবে।
দেশকে অস্থিতিশীলতার ঝুকি থেকে মুক্ত রাখার দৃঢ় সংকল্প চাই আমাদের। বঙ্গবন্ধুর মত জিহাদ ঘোষণা করতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অবৈধ পথ- পন্থাকে না বলতে হবে।
সেই সাথে লাখো শহীদের রক্তে গড়া এই দেশ। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে আরো মজবুত করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানো চাই।
আর যেন কখনো স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা চাই সকলের। দেশের কল্যাণে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার।
ওরা বিভিন্ন সুরতে আবিস্কার হতে চাচ্ছে এদেশে। ওরা যেন আমাদের এই সোনার দেশের কোন ক্ষতি না করতে পারে, আমরা অবশ্যই হুঁশিয়ার থাকব ইনশাআল্লাহ।
লেখক : শিক্ষক