রাম-রহিম উপাখ্যান | ফারুক নওয়াজ
এইদেশে যত রহিম-করিম-আসলাম ও ইসলাম..
এ-কথা সত্য আমরা একদা হিন্দুই আছিলাম।
আজকে তো আমি ভাব নিই কত– সাচ্চা মুসলমান..
গাইতো আমার পূর্বপুরুষ কৃষ্ণ-কৃষ্ণ গান।
মন্দিরে গিয়ে ধূপধুনা জ্বেলে, পুজা দিত দেবতাকে..
মাটির দেবতা হাত নাড়ত না– মাছি বসলেও নাকে।
রাম থেকে আমি রহিম হয়েছি, শ্যাম থেকে শামসুল..
হিন্দু থেকেই আমরা এসেছি– নয় তা মোটেও ভুল।
তখন আমার বাপ ছিল বৃষ, আম্মা আছিল গাভী..
মিথ্যে নয়-তো শ্রীরামপন্থী ভারতীয়দের দাবি।
পূর্বপুরুষ গরুর অম্বু খেয়েছে বাটিতে ঢেলে–
আজ আমি কেন ভেঙাই হিন্দু মাতৃমূত্র খেলে?
যত লাফালাফি, যত চাপাচাপি, যত মারি লাফ-ঝাঁপ..
অতীতে আমার মাতা ছিল গাভী, বলদ আছিল বাপ।
সেই বলদের বাচ্চা বলেই করি আজ হানাহানি..
হুজুরের বেশে ধর্ষণে মাতি, নছিহতে ঝারি বাণী।
নিজের স্বার্থে ফতোয়া বানাই, নারীকে ভোগ্য ভাবি..
আগাটাও খাই, পিছুটাও খাই, তারপরও খুঁজি লাভই।
মানবতা আজ ধুলাতে লুটায়, দানবতা মারে ফাল;
গরুর জন্ম বলেই আজকে আমাদের এই হাল!
সেই বলদের বাচ্চা বলেই ভয়াল একাত্তরে..
হত্যা-লুটের যজ্ঞ করেছি বদরের সাজ পরে।
এখনো করছি, করেই যাচ্ছি, খাচ্ছি দেদার ঘুষ..
করি চাঁদাবাজি, মানুষ হত্যা, নেইতো মোটেও হুঁশ।
সেজে ডাক্তার গরিব রোগীর পকেট করছি শেষ..
ইঞ্জিনিয়ার দুদকে মাদকে– ঘুষমচ্ছবে দেশ।
শুধু চাটুকার, শুধু তেলবাজ, শুধু মিথ্যার জয়..
অগ্রগতির আলোকিত পথে অসুর ছড়ায় ভয়।
ধান্দাবাজির চরম শিখরে বুদ্ধিজীবির দল;
পূর্বপুরুষ গো-মুত খেয়েছে– পাচ্ছি সেটারই ফল।
০৫.০৮.২০১৯