পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নয়াদিল্লি : ৯ নভেম্বর : ভারতে বিজেপি সরকারের আমলে ‘নোট বন্দি’ করা আইন রাষ্ট্রের স্বাভাবিক অবস্থার কোমর ভেঙে দিয়েছে এবং সাধারণ দরিদ্রদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন অল ইণ্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট সদস্য মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল কাসেমী।
তিনি বলেন, সেই সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আপনারা আমাকে ৫০ দিন সময় দিন আমি সবকিছু ঠিক করে দেব। নচেৎ আপনাদের যেমন ইচ্ছা আমাকে সাজা দেবেন। কিন্তু দু’বছর পার হয়ে গেলেও রাষ্ট্রের জনগণের সঙ্গে ওয়াদার কিছুই পূরণ করতে পারেননি মোদি সরকার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, এমন অসম, অবিবেচনাপ্রসূত একটি সিদ্ধান্ত দেশের জনগণকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে৷ মানুষ মারা যাচ্ছে। কঠিন সঙ্কটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে মানুষের জীবন। এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দরিদ্র লোকেরা সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। অথচ এর প্রেক্ষিতে তারা কি পাচ্ছে? কিছুই না। তাদের অনেকেরই বেঁচে থাকার মতো আর কিছুই বাকী নেই।
মাওলানা আজমল বলেন, সরকার না তো কালো টাকা জব্দ করতে পেরেছে না পেরেছে তাদের ধরতে, যারা নিজেদের কাছে তা জমিয়ে রেখেছেন। ফলে সব বোঝা এসে পড়েছে দেশের হতদরিদ্র লোকদের উপর৷ উপর্যুপরি ঘটনা তো হলো একসাথে এতো টাকার নতুন নোট ছাপানোর বোঝা বইতে হলো সরকারকে। তবে, হ্যাঁ! লাভ যেটুকু হয়েছে তা হলো গরীবদের কল্যাণে জমা করা পয়সা নিয়ে বিজে মালিয়া, নিরু মোদির মতো লোকেরা ভেগে গেছেন। এইকাজে বেশ সক্ষমতা দেখিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে বড় বড় কর্পোরেট হাউসগুলোকে মোটা অঙ্কের লোন দিয়ে সরকার তাদের খুশি রেখেছেন বলে সমালোচনা করেছেন মাওলানা আজমল। তিনি বলেন, সরকারের এই প্রক্রিয়া গ্রহণ রাষ্ট্রের জনসাধারণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি। কিন্ত আফসোস সরকারি গদিতে বসা লোকজন এখনো আনন্দে নিজেদের পিঠ হাতড়াচ্ছেন এবং ‘নোট বাজেয়াপ্ত’ সিদ্ধান্তকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।
মাওলানা আজমল তার খেদোক্তি প্রকাশ করে বলেন, আসলে বাস্তবতা হলো এই সরকার যে দেশের সর্বস্তরেই ব্যর্থ তা প্রমাণ হয়ে গেছে৷ কেননা তারা দেশের স্থিতিশীলতা ও বসবাস উপযোগী অবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে৷ ভারতীয় কারেন্সি ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ জায়গায় চলে গেছে৷ জনগণের কর্মসংস্থান তৈরী করার আগে ‘নোট বন্দির’ এমন সিদ্ধান্ত জনগণকে হতাশায় ফেলে আরো বেশী অকর্মণ্যতার দিকে নিয়ে যাবে। অনিয়ম, দুর্নীতি এবং হাতাশাগ্রস্ত হয়ে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া লোকদের ঠিক করা থেকে বিরত থেকে সরকার সিবিআই, এসবিআই-এর মতো উল্লেখযোগ্য সংস্থাকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অনুবাদ ও গ্রন্থনা : কাউসার মাহমুদ
সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির
তথ্যসূত্র : ডেইলি, হামারা সামাজ