রিজার্ভ নেমে এলো ১৯ বিলিয়নের ঘরে

রিজার্ভ নেমে এলো ১৯ বিলিয়নের ঘরে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাবদ ১২১ কোটি ডলার পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব মতে, দেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ২০.৬৬ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৬৬ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত সপ্তাহে ২৩১ মিলিয়ন বা ২৩.১ কোটি ডলার খরচের পর এ রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৬.৪২ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৬৪২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে গঠিত তহবিলের অর্থ ৫.৭৬ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০.৬৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ২০.৬৬ বিলিয়ন। এখান থেকে আকুর বিল পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে ১৯.৪৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়।

আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আকুর পেমেন্ট হলেও এখনো ভাউচার পাইনি।

আগামীকাল ভাউচার পাব। তারপর বিস্তারিত জানাব।’

আকু একটি আন্তর্দেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর।

এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে রিজার্ভের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যায়, ২ নভেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০.৬৬ বিলিয়ন (দুই হাজার ৬৬ কোটি) ডলার। তার মানে সাড়ে তিন মাসে রিজার্ভ কমেছে ২৯০ কোটি ডলার।

এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ রেকর্ড গড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট। ওই দিন রিজার্ভ ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে ওঠে। এরপর ডলার সংকটে গত বছর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২১.৫০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ২৫.০২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ তে ৩০.৩৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৩.৬৭ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩২.৯৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৩২.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৩৬.৩ বিলিয়ন। ২০২০-২১ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৪৬.৩৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪১.৮২ বিলিয়ন ডলার এবং সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *