পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-এর বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সরকারের করণীয় এবং রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ করে বিমানবন্দর, মিশন ও ব্যাংকে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে আমিরাতের বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের আয়োজনে ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে প্রবাসীদের ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেসক্লাব সভাপতি শিবলী আল সাদিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জনির পরিচালনায় গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।
সেমিনারে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংক চার্জ মওকুফ, মোবাইল অ্যাপ তৈরি, চলমান রেমিট্যান্স প্রণোদনা ৪ শতাংশে উন্নীতকরণ, বন্ডের লভ্যাংশ বৃদ্ধি করা, দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য পুনরায় রপ্তানির সুযোগ তৈরি, হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও জড়িতদের চিহ্নিতকরণ, দেশের বাইরের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ খেলাপিদের ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব করেন বক্তারা।
পাশাপাশি তারা রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক ও বিমানের সেবা অন্যান্য সংস্থার সেবার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা তৈরি করতে বিভিন্ন প্রস্তাব করেন।
এ ছাড়া, বিদেশে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগ নেওয়া, শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা প্রদান, প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতা সম্পন্ন শ্রমিকদের বিদেশে প্রেরণ, প্রবাসীদের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু ও ক্যাপিটাল মার্কেট তৈরির বিষয়ে সুপারিশ করেন তারা।
কমসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে এই গোলটেবিল আলোচনা অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। এই যে বৈশ্বিক সংকট, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এখন যে সংকটে আছে এটাকে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই সংকটের প্রভাবে শুধু বাংলাদেশ না, গোটা পৃথিবী শঙ্কিত। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের অ্যানালাইসিস আসছে। তাতে দেখা গেছে, এর ফলে আমেরিকা ও রাশিয়া অত্যন্ত লাভবান হচ্ছে।
এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান নাসির বলেন, দেশের নানান সংকটে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের অনেকগুলো দাবির মধ্যে অন্যতম রেমিট্যান্স প্রণোদনার পরিমাণ ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা। সরকার পণ্য রপ্তানি, কাঁচামাল আমদানি থেকে শুরু করে শিল্পখাতে ১৫, ২০ বা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দিচ্ছে। অথচ সেখানে কত অনিয়ম-দুর্নীতি হয় তা বলে শেষ করা যাবে না। সেক্ষেত্রে প্রবাসীরা বৈধ অর্থ প্রেরণে ৪ শতাংশ প্রণোদনা চাওয়া যৌক্তিক দাবি বলে মনে করি। এই দাবি বাস্তবায়ন করা হলে অচিরেই হুন্ডির পিঠে কষাঘাত করা সম্ভব হবে।