পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অধিকাংশ মরদেহই কারখানার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
কারখানার শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, কারখানাটি তিন শিফটে পরিচালিত হতো। সেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি শ্রমিক। কারখানাটিতে সেজান জুসের কর্ক ও লেভেল প্যাকেটিংয়ের কাজ করা হতো। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই)বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে নিচ তলায়। ভবনটির ছাদ থেকে ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তবে জীবন বাঁচাতে গিয়ে অনেক শ্রমিক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। নিহতও হন কয়েকজন, যাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
অগ্নিনির্বাপণের দায়িত্বে থাকা ফায়ার সার্ভিসের মুস্তাফিজ নামের এক ফাইটার বলেন, কারখানা ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকেই অধিকাংশ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভবনটির প্রতিটি গেট তালাবদ্ধ ছিল। প্রতিটি সিঁড়ি নেটের জাল দিয়ে আটকানো দেখা গেছে। হয়ত ওপরে ওঠার সিঁড়ির মুখ নেট দিয়ে আটকানো থাকায় অনেকে চাইলেও ছাদে যেতে পারেননি। এছাড়া সামনে দিয়ে বের হওয়ার সুযোগও ছিল না আগুনের কারণে। যে কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, আগুনের কারণ অনুসন্ধানে তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমরা কাজ করছি। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখনও পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি। নির্বাপণের চেষ্টা চলছে।
অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে এখন ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে- জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা বাকি। ওই দুই তলা হচ্ছে কারখানার গোডাউন। তবুও আমরা সার্চ করছি, আশা করছি ভেতরে আর কোনো মরদেহ নেই।
কীভাবে আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।