রোজা না রাখার ফতোয়া এবং | মাহফুজ আহমাদ
একজন রিক্সা ওয়ালার জিজ্ঞাসা! আমাদের তো ১২ মাস রিক্সা চালাতে হয়। তাই পরে কেমনে রোযা ক্বাযা করব?
আহমাদ
ভাই ! আপনি কি আজ রোযা রেখেছেন?
রিক্সাওয়ালা
না ভাই-রাখিনি।এই করোনার সময় কি আর রোযা রাখা যায়। আমাদের প্রিয় হুজুর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হুজুর নাকি বলেছেন রিকশাওয়ালাদের রোযা রাখতে হয় না।
আহমাদ
ইন্নালিল্লাহি — এসব কি বলেন ভাই! আপনি কি নিজের কানে শুনেছেন? নাকি কেউ বলেছে।
রিকশাওয়ালা:
না ভাই আমাদের এলাকার তরুণ যুবক ভাইয়েরা বলেছে। আমরা মোটামুটি অনেকেই এখন রোযা রাখা ছেড়ে দিয়েছি।
তবে আরেকটি কথা- হুজুর নাকি এও বলেছেন যে, পরে সেগুলোর ক্বাযা করতে হবে।
এখন আমার প্রশ্ন
আমরা রিকশাওয়ালা ১২ মাস রিক্সা চালাই। আমরা পরে কাযা রোযা কেমনে রাখুম! আমাদের জন্য ত সব মাসই সমান।
হুজুর যদি আমাদের জন্য রোযা না রাখার কোন ফতুয়া দিতেন তাহলে কতই না ভাল হত! এনিয়ে আমি মহা টেনশনে আছি।
আহমাদ!
টেনশনের কোন কারণ নেই। তুমি এসব শুনা কথায় কান দিও না। চলো আমাদের ইমাম সাহেবের কাছে যাই, তিনি একজন দক্ষ আলেম। অবশ্যই তিনি সুন্দর একটি সমাধান দেবেন।
( তারা দুজন মিলে ইমাম সাহেবের কাছে গেলেন)
পরে ইমাম সাহেব কোরআন ও সহীহ্ সুন্নাহর আলোকে সঠিক সমাধান দিলেন, তিনি সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াত তেলাওয়াত করে এর ব্যখ্যাসহ তাকে বুঝিয়ে দিলেন।
আয়াতটি হল :
(شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْءَانُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ.)
অনুবাদ : (রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।)
পরে রিকশাওয়ালা নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার কোরআনের পথে ফিরে এলো। আলহামদুলিল্লাহ- এভাবে আল্লাহ্ই মানুষকে উত্তম পথপ্রদর্শন করেন।
লেখক : ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, মাদীনা মুনাওয়ারা সৌদিআরব।