লকডাউনে সন্তানকে গুরুত্ব দিন
মাসউদুল কাদির : ঘরে মা কিংবা বাবা যেকোনো কারণেই হোক একটু বেশি সময় দিচ্ছেন। এ সময় যেনো শিশুর জীবনকে আলোকিত করে। আরও বিষিয়ে তোলার মতো কোনো পরিস্থিতির যেনো সম্মুখীন না হয় আপনার প্রিয় সন্তান। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লকডাউনে শিশুর অশান্ত হয়ে উঠেছে শিশু। এ মুহূর্তে শিশুকে সঙ্গ দেয়া, শিশুর সঙ্গে খেলাধুলা বা পড়াশোনাকেও খেলাচ্ছলে নিয়ে নেওয়ার কাজটাই হবে সবচেয়ে উত্তম। কিন্তু সহসাই রাগারাগিতে শিশু আরও বেশি সহিংস হয়ে উঠতে পারে। এ থেকে শিশুকে মা-বাবাকেই বন্ধুবৎসল ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আমরা সমাজচিত্র অবলোকন করতে গিয়ে দেখেছি, দেশে করোনা পরিস্থিতিতে অপরাধ ও সহিংসতা আগেরর যেকোনো তুলনায় বেড়েছে। বস্তুত বিশ্বজুড়ে ঘরবন্দী মানুষের মধ্যে সহিংসতা বাড়ছে, বিষিয়ে উঠছে শিশুও। এসব সহিংসতায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে শিশুদের মনে।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, পুরো বিশ্ব একটি সাইকোলজিক্যাল প্যানডেমিকের দিকে যাচ্ছে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো, মানসিক চাপ পড়ছে শিশু-কিশোরদের ওপরও। তারা বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। বন্ধুদের সঙ্গে যে বিষয়গুলো বলতে পারে তা মা-বাবার সঙ্গে বলতে না পেরে তারা কষ্ট পায়। তারা ইন্টারনেটে অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছে।
স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন ইন্টারনেট বেশি ব্যবহার করায় অন্যরকম একটি যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে কিশোর-কিশোরীরা। তবে যেসব পরিবারের সন্তানরা মা-বাবার সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই ভালো সম্পর্ক তৈরি করেছে তারা এখন ভালো সময় কাটাচ্ছে। এ ছেলেমেয়েরা মা-বাবাকে কাজে সাহায্য করছে। তারা অভিভাবকদের সঙ্গে গল্পও করছে। করোনা পরিস্থিতি আমাদের আরও একটি বিষয় শিখিয়েছে, তা হলো- মা-বাবার সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে যাবে শিশুরা সব কথা তাদের অভিভাবককে বলতে পারে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সন্তানদের বিষয়টি সুন্দরভাবে বোঝাতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের ওপর খবরদারি করা হলে বা বারবার একই কথা বলা হলে তারা বিরক্ত হয়। মহামারীর এ দুর্যোগের সময় শিশুর মনোজগতের বৈকল্য কাটাতে সম্ভাব্য সব ধরনের বিকল্প কাজে লাগাতে হবে। সুন্দর সুযোগ অনলাইন ক্লাসগুলোর বিস্তার বাড়াতে হবে।
প্রয়োজনে স্কুলড্রেস পরে এসব ক্লাসে শিশুদের অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। মনে রাখা দরকার, হতাশা থেকে রাগ হয়, অল্পে খেপে যায়, পড়াশোনা করতে চায় না, মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এসব সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে বাবা-মাকে সন্তানের প্রতি আরও আন্তরিক হতে হবে। শিশুকে বকাঝকা করায় কোনো সমাধান নেই।