পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : যুক্তরাজ্যে ২০২৩ সালে তেল ও গ্যাস সম্মেলনের বাইরে অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভের অভিযোগে করা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেলা বিচারক জন ল এই রায় দেন।
রায়ে ২১ বছর বয়সী সুইডিশ জলবায়ু কর্মী ও তার চার সহযোগীকে খালাস দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রিটিশ রাজধানীতে পরিবেশ রক্ষায় বিক্ষোভ করেন তারা। তবে অনুমতি না নেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৮ সালের মে মাসে গ্রেটার বয়স যখন ১৫, সেসময় গ্রেটা স্থানীয় এক পত্রিকার জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে এক রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পান।
তিন মাস পর আগস্টে সুইডেনের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ করা শুরু করেন তিনি। সুইডেন সরকার যেন ২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের আলোচনায় ঠিক হওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্বন নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, সে লক্ষ্যে বিক্ষোভ করে গ্রেটা।
“স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট” লেখা একটি লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে তিনি পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়ান এবং শুক্রবার স্কুল ফাঁকি দেয়া শুরু করেন। বিশ্বব্যাপী ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও তিনি আহ্বান জানান যেন তারা তার সাথে প্রতিবাদে যোগ দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিক্ষোভ ভাইরাল হয় ও তার প্রতিবাদের কারণ দিন দিন জনপ্রিয়তা পায়।
বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা গ্রেটার প্রতিবাদের আদলে প্রতিবাদ শুরু করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ফ্রাইডেজফরফিউচার জনপ্রিয় হয়।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী গ্রেটার প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজ নিজ দেশে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: কী কারণে হঠাৎ বন্ধ হয়েছিলো মেট্রোরেল
এরই অংশ হিসেবে লন্ডনে এনার্জি ইন্টেলিজেন্স ফোরাম তেল ও গ্যাস শিল্পের নেতাদের বৈঠকের বাইরে বিক্ষোভ করতে গেলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবারের আদালতের রায়ের আগে, থুনবার্গ লন্ডনে জলবায়ু ধর্মঘট করতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “যদিও আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। তবে সারা বিশ্বে জলবায়ু, পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীদের তাদের সক্রিয়তার জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। বিচার করা হয়েছে, কখনও কখনও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কাজ করার জন্য আইনি শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে আসল শত্রু কারা।”
আরও পড়ুন: মালদ্বীপ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করছে ভারত
গ্রিনপিস ইউকে প্রচারক মাজা ডার্লিংটন শুক্রবারের রায়কে বিক্ষোভের অধিকারের “বিজয়” বলে স্বাগত জানিয়েছেন।
এদিন থুনবার্গ ও তার চার সহযোগী আদালত ছাড়ার আগে নিজেদের জড়িয়ে ধরেন।