২০শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ২৭শে শাবান, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চলতি মাসের শুরু থেকেই সারা দেশে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও পড়ছে কুয়াশা। শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে এর অনুভূতি বেশি। শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে ওই সব অঞ্চলে বেড়েছে শীতকালীন রোগ। এসব রোগে আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু, এ ছাড়া রয়েছে বৃদ্ধ ও নারীরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সোমবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের শুরুতে এটিই সর্বনিম্ন। এ ছাড়া রাজশাহীর বেশির ভাগ স্থানেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু বেশি। খুলনার কিছু কিছু অঞ্চলেও একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। যেখানে গাছপালা বেশি সেখানেই শীতের আমেজ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। চলতি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে এই তাপমাত্রা বিরাজ করবে। রাজশাহী বিভাগ ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু অঞ্চলে এখন শীতের অনুভূতি বেশি থাকবে। এরপর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমে ডিসেম্বর থেকে পুরোদমে শীতকাল শুরু হবে। সে সময় অনেক স্থানে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসতে পারে। মূলত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস আমাদের দেশে শীতকাল হিসেবে বিবেচিত হয়।
এদিকে যেসব অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়েছে সেখানে শীতকালীন রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগীর ভিড় বেড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এমনটি হচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী। একই সংখ্যক রোগী আসছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোনো বেড নেই। সব রোগীকেই থাকতে হচ্ছে মেঝেতে। শিশু ওয়ার্ডে বিছানা আছে ১৭টি। বেশির ভাগ রোগীকে থাকতে হচ্ছে মেঝেতে।
কুড়িগ্রামেও শীতের প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হচ্ছে। গতকাল দুপুরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ১০ শয্যার এই ওয়ার্ডে ২৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। যার মধ্যে ১৯ জনই শিশু। শয্যা সংকটের কারণে অনেকেই শিশুদের নিয়ে ঠাণ্ডা সত্ত্বেও মেঝেতে অবস্থান নিয়ে আছেন। আউটডোরে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকদের রুম ও ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন। যার বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
চিকিৎসকরা জানান, দিনে গরম, রাতে ঠাণ্ডা এমন বৈরী আবহাওয়ার পর হঠাৎ ঘনকুয়াশার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। দিনে দিনে রোগীর ভিড় বাড়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
ওই হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান সরদার জানান, সীমিত জনবলসহ নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।