পাথেয় রিপোর্ট : কওমি মাদরাসার সরকারি স্বীকৃতির কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য শুকরিয়া মাহফিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা প্রদান করবে হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। এর সঙ্গে রয়েছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়া বাংলাদেশ, ঢাকা, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস, পটিয়া, তানজীমুল মাদারিস, বগুড়া, আজাদ দ্বীনী এদারা, সিলেট, গহওহারডাঙ্গা বেফাক, গোপালগঞ্জ সহ ছয় বোর্ড।
৫ নভেম্বর সোমবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুকরিয়া মাহফিল করবে সম্মিলিতি কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া। ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় গণভবনে আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। দ্বিপাক্ষিক এ আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত হয়, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫ নভেম্বর শুকরিয়া মাহফিল।
শুকরিয়া মাহিফলে সারাদেশের দাওরায়ে হাদিস মাদরাসার মুহতামিম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেবেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেফাকুল মাদারিসিদ্দিনিয়্যা বাংলাদেশের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আহমাদ মুস্তাকিম হুসাইন আল শাকির পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমারা আমাদের বোর্ড অন্তর্ভুক্ত সব মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদের নিয়ে শায়খুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসঊদ সাহেবের নেতৃত্বে সংবর্ধনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুকরিয়া জানাবো ইনশাআল্লাহ।
এদিকে ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় গণভবনে বৈঠকে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন হাইআতুল উলয়ার কো চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী, বেফাকের সহসভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা মুসলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, সহকারী মহাসচিব মুফতি নুরুল আমিন ও মুফতি জসিমুদ্দীন প্রমুখ।
সূত্রে জানা যায়, সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনার বিষয়ে আমন্ত্রণ জানালে তিনি খুব বিনয়ের সঙ্গে বলেন, সংবর্ধনার বিষয়টি শুনে আমার খুব লজ্জা লাগছে। আমি বাহবা বা সুনামের জন্য এ কাজ করিনি। একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্যই আমি কওিম স্বীকৃিত দিয়েছি। এ জন্য আমি সংবর্ধনার আশা করিনি। আমি আপনাদের ওয়াদা দিয়েছিলাম, সেই ওয়াদা রক্ষা করেছি অামি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা জানেন আমার বাবা ইসলামের জন্য কতোটা নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাকরাইল মসজিদের জায়গা, ইজতেমা মাঠের জায়গা বরাদ্দ করেছেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন স্থাপনসহ সবরকম ধর্মীয় কাজ করেছেন পরকালের জন্য। তিনি এ দেশের আলেম-উলামাদের অত্যাধিক ভালোবাসতেন। তাদের শ্রদ্ধা করতেন। তাদের কথা ভাবতেন। আমিও দেশের কওমি মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদের কথা চিন্তা করে স্বীকৃতি দিয়েছি। এখানে আমার প্রাপ্তির কেনাও আশা নেই।
এসময় আল্লামা আহমদ শফী কুরআন হাদিসের বিভিন্ন উদ্বৃতি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা আদায়ের কথা জানান। আল্লামা শফী হাদিসের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘হাল জাযাউল ইহসানি ইল্লাল ইহসান’ মানুষের উপকারের প্রতিদান কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। আরেক হাদিসে আছে, যে মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করে না সে আল্লাহরও কৃতজ্ঞতা আদায় করে না। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞতাস্বরূপ শুকরিয়া মাহফিল করতে চাই। সেখানে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাই। আমারা আপনাকে আমাদের শুকরিয়া জানাবো। আপনি আমাদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন।
এসময় বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর মিয়া মো. জয়নাল আবেদিন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ।