শ্রমিকদের সংকট সমাধানে গুরুত্ব দিন

শ্রমিকদের সংকট সমাধানে গুরুত্ব দিন

নৌযান ধর্মঘট প্রত্যাহার

শ্রমিকদের সংকট সমাধানে গুরুত্ব দিন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : খোরাকি ভাতা দেয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়েছে নৌযান ধর্মঘট। মানুষের কষ্ট বাড়ে এমন পদক্ষেপ কখনোই কাম্য নয়। সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সবসময় জনগণকেই চরম কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া জরুরি। নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে সারা দেশে নদীপথে পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

নৌযান শ্রমিকরা সোমবার মধ্যরাত থেকে ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছে। তাদের বেশ কিছু দাবির যৌক্তিকতা থাকলেও নৌযান মালিকরা বলছেন করোনাকালে যখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী-কর্মকর্তা ছাঁটাই হচ্ছে, বেতন অর্ধেক করছে সে সময় অযৌক্তিক দাবি তুলে ধর্মঘটের নামে অরাজকতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মালিকপক্ষ ধর্মঘট প্রত্যাহার এবং এ-সংক্রান্ত রিট মামলা নিষ্পত্তির পর শ্রমিকদের আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে দেশের তিনটি বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা, সিটি ও আবুল খায়ের গ্রুপ তাদের নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা খোরাকি ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে জাহাজ মালিকদের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় শ্রমিকরা ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে ও পণ্য পরিবহনে চলছে অচলাবস্থা। ধর্মঘটে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।

নদীপথে পণ্যবাহী কোনো নৌযান চলছে না। কিছু লাইটার জাহাজ চলাচল বা পণ্য খালাসের চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা জোর করে কাজ বন্ধ করে দেয়। কর্ণফুলী নদীসহ বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে অলস বসে আছে লাইটার, ট্যাঙ্কার, বাল্কহেডগুলো। স্মর্তব্য, বিদেশ থেকে গম, ভুট্টা, ডাল, সার, চিনি, সিমেন্ট ক্লিঙ্কার, পাথর, কয়লা, ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন খোলা পণ্য বড় কার্গো জাহাজে আমদানি করা হয়। বন্দরসংশ্লিষ্ট নদীর ড্রাফট কম থাকায় এসব বড় জাহাজ সরাসরি জেটিতে ভিড়তে পারে না। তাই বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ রেখে ছোট ছোট জাহাজে পণ্য খালাস করা হয়। শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন শিল্পকারখানার কাঁচামাল পরিবহন কার্যত বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘট দীর্ঘায়িত হলে বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকাল বেড়ে যাবে, এর প্রভাব পড়বে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর। বর্তমানে দুর্গাপূজার কারণে যাত্রীবাহী নৌযানকে ধর্মঘটের বাইরে রাখা হয়েছে।

অচলাবস্থা নিরসন না হলে যাত্রীবাহী নৌযানেও ধর্মঘটের হুমকি দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। করোনার প্রতিক্রিয়ায় দেশে নিত্যপণ্যের সংকট দানা বেঁধে উঠছে। ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সংকট উত্তরণে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *