সাংবাদিক, প্রবাসী ও কর্মহীনদের প্রণোদনা দেয়ার আহ্বান
শ্রমিকদেরকে ২৫ রমযানের মধ্যে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করুন
-সাংবাদিক সম্মেলনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম :: মানবিক কারণে ও দুর্দশা লাগবে করোনা পরিস্থিতিতে সকল শ্রেণীর কর্মহীন শ্রমিকদেরকে ২৫ রমজানের মধ্যে ১৫ হাজার টাকা করে এককালীন সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শ্রমিক সংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন।
১৩ মে বুধবার বেলা ১২ টায় পুরানা পল্টনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ আহ্বান জানান ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে করোনা যোদ্ধা গণমাধ্যম কর্মীদেরকে উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা প্রদান, অসহায় হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের পরিবারকে নগদ সহযোগিতা দেয়াসহ সরকারী খরচে বেকার হয়ে যাওয়া প্রবাসীদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, সহ-সভাপতি মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, অনলাইনে যুক্ত ছিলেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জয়েন্ট সেক্রেটারী জেনারেল শহিদুল ইসলাম কবির, এডভোকেট এবিএম শেহাবুদ্দিন শেহাব, সৈয়দ ওমর ফারুক, আলহাজ্ব নজরুর ইসলাম, ইমাম হোসেন ভুইয়া, ইউসুফ আলী।
করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন শ্রমিকদের সংকট উত্তরণে নিন্ম উল্লেখিত প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয় :
১. গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা ঘোষণা করে ঈদের পূর্বেই তা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. প্রবাসী শ্রমিক যারা রেমিটেন্স যোদ্ধা; তাদের সিংহভাগ মানুষ প্রবাসে থাকেন এবং দেশে তাদের অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন, তাদেরকে দ্রæত নগদ প্রণোদনার আওতায় আনতে হবে এবং আটকাপড়া শ্রমিকদের যারা স্ব-ইচ্ছায় দেশে আসতে চায় তাদের সরকারী খরচে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
৩. সড়ক পরিবহন, নৌ পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ হকার, ফুটপাতের হকার,বন্ধ কলকারখানার শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, দিনমজুর, কিন্টারগার্ডেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী, সেলুন শ্রমিক, লন্ড্রী শ্রমিক, ঘাটমাঝি, কুলি মজুর, কোয়ারী শ্রমিক, আইনজীবি সহকারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দল মত ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সহযোগীতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।প্রাথমিকভাবে মানাবিক কারণে এবং দুর্দশা লাঘবে ২৫ শে রমাজানের মধ্যে সকল শ্রেণীর কর্মহীন শ্রমিকদেরকে ১৫,০০০/- টাকা করে সাহায্য প্রদান করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি। এ কাজে ধন্যাঢ্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিগণকে কর্মহীন শ্রমিকদের সাহায্যার্থে যাকাতসহ ১০% সম্পদ দান করাার অনুরোধ জানাচ্ছি। এর সাথে সরকারী, বেসরকারী কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণকেও কমপক্ষে একমাসের সমতুল্য টাকা কর্মহীন শ্রমিকদের সাহায্যার্থে দান করার অনুরোধ করছি। এছাড়া দুর্নীতিবাজদের কালোটাকা, বিদেশে টাকা পাচারকারী এবং ঋণখেলাপীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে কর্মহীন শ্রমিকদের সাহায্যার্থে উক্ত টাকা ব্যয় করার জন্য সরকারকে জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।
৪. সরকার দুইবারে যে ১ কোটি রেশনকার্ড কর্মসূচী হাতে নিয়েছে তা প্রসংশনীয় উদ্যোগ। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের কারণে সরকারের এই উদ্যোগের সুফল প্রকৃত প্রাপকরা পাবে বলে দেশের জনগণ বিশ্বাস করতে পারছেনা। তাই দেশপ্রেমিক ও বলিষ্ঠ সেনাবাহিনী যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র করে সুনাম অর্জন করে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছে, তেমনি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রেশনকার্ডের তালিকা প্রণয়ন করা গেলে দেশের জনগণ সরকারের শুভ উদ্যোগের সুফল পাবে। নয়তো মুক্তিযোদ্ধা তালিকার মতো ত্রæটিপূর্ণ রেশনকার্ড গ্রহিতাদের তালিকা হতেই থাকবে আর দুর্নীতির নতুন ক্ষেত্রবৃদ্ধি পাবে কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ভুখা থেকে অভিশাপ দিয়েই যাবে।
প্রকৃত অভাবগ্রস্থদের তথ্য সংগ্রহেএ দেশের বীর গাথা সেনাবাহিনী সাড়ে চার লক্ষ মসজিদের ইমাম ও প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকে ডাটাকালেকশনে সহযোগীতা নিতে পারেন।
৫. করোনা মহামারীরকারণে সৃষ্ট এহেন জাতীয় মহাসংকটউত্তরণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সেবাসংস্থা, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ, শিল্পমালিক ও ধর্মীয় নেতৃবর্গের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
৬. মানুষের জীবন বিপন্ন করে এমন ধরণের কার্যক্রম যেমন ভেজালখাবার, এডিস মশার উপদ্রপ, দুর্নীতি,সন্ত্রাস, সকল ধরণের পাপাচার এবং অশ্লীলতা বন্ধে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. শ্রমিকদের জীবন নিরাপদ রাখা, ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, মালিক ও শ্রমিকগণের সাথে সু-সম্পর্ক সৃষ্টি, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং শ্রমিক ও মালিকগণের উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে সকল শ্রমিক সেক্টরে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কর্তৃক প্রণীত ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।