সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের হার

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের হার

ক্রীড়া ডেস্ক : রাজধানীর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।

মিরপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৯১ রান তাড়া করতে নেমে ৩ ওভার বাকি থাকতেই ১৪০ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস, হেরেছে ৫০ রানের বড় ব্যবধানে। এই হারের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজের ট্রফিটাও (২-১ ব্যবধানে) ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে তুলে দিল সাকিব আল হাসানের দল।

বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। তামিম ইকবাল ৮ রান করে রানআউটের কবলে পড়লেও ঝড়ের গতিতে এগোচ্ছেলেন লিটন দাস। তাতে ৪ ওভারে ৬২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। কিন্তু তার আগে ঘটল আরেক ঘটনা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম ও শেষ বল নিয়ে মাঠে হয়ে গেল মহা-হাঙ্গামা। আসলে বাংলাদেশি আম্পায়ার তানভির আহমেদই ভুলটা করেছিলেন। ওশানে থমাসের টানা দুই বলে দুটি ‘নো’ বল ডাকেন আম্পায়ার। দুটি বলই ছিল দাগ ছোঁয়া অবস্থায়।

এর মধ্যে ওভারের পঞ্চম বলে লিটন দাস আউটও হয়ে যান। কিন্তু আম্পায়ার তো ‘নো’ ডেকে ফেলেছেন, সঙ্গে ফ্রি-হিট। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রেথওয়েট। প্রতিবাদ জানানোরই কথা!

এই ঝামেলায় প্রায় ৮ মিনিট ম্যাচ বন্ধ থাকে। তবে আম্পায়ার যখন কল দিয়ে ফেলেছেন, ফ্রি হিটটা পেয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার সেটা থেকে ছক্কাও আদায় করে নেন। কিন্তু বাংলাদেশের ছন্দটা যেন নষ্ট হয়ে যায় ওই ঘটনার পরই। ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের পরের ওভারেই টানা দুই বলে আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার (৯) আর সাকিব আল হাসান (০)।

ষষ্ঠ ওভারে মুশফিকুর রহীমও ফেরেন মাত্র ১ রান করে। কেমো পলের বলে অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। ৬৬ রানে বাংলাদেশ হারায় ৪টি উইকেট। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু ৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করে তিনিও কেমো পলের শিকার হন। ৮০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর পর দ্রুতই খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি।

একটা প্রান্ত ধরে লড়াই করে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। ২৫ বলে ৩টি করে চার ছক্কায় ৪৫ রান করে তিনি আউট হলে শেষ আশাটাও শেষ হয়ে যায়। আরিফুল হক রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন করেন ৫ রান। পরের সময়টায় মেহেদী হাসান মিরাজ আর আবু হায়দার রনি পরাজয়ের ব্যবধানটাই যা একটু কমিয়েছেন। শেষ রক্ষা হয়নি। মিরাজ ১৯ বলে ১৯ করে আউট হন। ১৭ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন রনি।

এর আগে ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯০ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ৫ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতেই ৭৬ রান তুলে ফেলেন ক্যারিবীয় দুই ওপেনার এভিন লুইস আর শাই হোপ। বেশি ভয়ংকর ছিলেন লুইস। ১২ বলে ২৩ রান করা শাই হোপকে বোল্ড করে এই জুটিটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। এরপর কেমো পলকে মাত্র ২ রানে আরিফুল হকের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজুর রহমান। লুইসের ব্যাটে চড়ে তবু দ্রুতগতিতে রান তুলে চলছিল সফরকারী দল। তাকে আটকানোর পথই খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। যে-ই বল করতে এসেছেন, তার ওপরই চড়াও হয়েছেন লুইস।

তবে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের লাগাম অনেকটাই টেনে ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের দশম ওভারে বল করতে এসে টানা দুই বলে দুই উইকেট নেন এই অফস্পিনার। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যানটিকেই ফিরিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ২৬ বলে ৬ চার আর ৮ ছক্কায় ৮৯ রান করা এভিন লুইসকে বোল্ড করেন তিনি। পরের বলে এলবিডব্লিউ করে সিমরন হেটমেয়ারকেও (০) সাজঘরের পথ দেখান মাহমুদউল্লাহ। ১৬ বলে ১৯ করে রভম্যান পাওয়েল হন তার তৃতীয় শিকার। রপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট খুইয়েছে ক্যারিবীয়রা। ২৪ বলে ২টি করে চার ছক্কায় নিকোলাস পুরানের ২৯ রান ছাড়া পরে বলার মতো রান করতে পারেননি আর কেউ।

বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন মাহমুদউল্লাহই। ৩.২ ওভারে ১৮ রানে ৩টি উইকেট নেন তিনি। সাকিব আর মোস্তাফিজও ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন, তবে তারা রান খরচ করেছেন বেশি। সাকিব ৪ ওভারে দেন ৩৬ রান, মোস্তাফিজ ৩৩।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *