সুইজারল্যান্ডে বোরকা পরলেই ১ হাজার ডলার জরিমানা

সুইজারল্যান্ডে বোরকা পরলেই ১ হাজার ডলার জরিমানা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : জননিরাপত্তা নিশ্চিতে গত বছর প্রকাশ্যে এবং জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মুখঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ হয়েছিল সুইজারল্যান্ডে। সেই নিষেধাজ্ঞাকে আরও পোক্ত করতে এবার নতুন একটি আইন জারির প্রস্তুতি চলছে দেশটির পার্লামেন্টে।

প্রস্তাবিত নতুন আইন অনুযায়ী, সরকারের নিষেধ অমান্য করে কেউ যদি মুখঢাকা বোরকা পড়েন তাহলে তাকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ডলার জরিমানা গুণতে হতে পারে।

অর্থাৎ, বাড়ির বাইরে সড়কে চলাচল করার সময় কিংবা কর্মক্ষেত্র, রেস্তোরাঁ, সুপারমার্কেট বা যে কোনো জনসমাগমপূর্ণ স্থানে অবশ্যই মুখঢাকা বোরকা পরা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে সুইজারল্যান্ডে বসবাসকারী লোকজনকে। যদি কেউ মুখঢাকা বোরকা পরেন, তাহলে তার কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা আদায় করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তবে কেবল মুখঢাকা বোরকার ব্যাপারে এই জরিমানা কার্যকর যাবে। কোনো মুসলিম নারী যদি তার মুখমন্ডল না ঢেকে বোরকা-হিজাব বা এই জাতীয় কোনো পোষাক পরেন, সেক্ষেত্রে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে না। এমনকি করোনা ও অন্যান্য অসুস্থতাজনিত প্রয়োজনে যারা মাস্ক পরেন, তাদের ওপরও কার্যকর হবে না এই আইন।

এমনকি আইনের খসড়ায় ‘বোরকা’, ‘হিজাব’ ইত্যাদি শব্দও ব্যবহার করা হয়নি।

সুইজারল্যান্ডের প্রধান ডানপন্থী রাজনৈতিক দল এগেরকিঙ্গের কমিটি বুধবার পার্লামেন্টে এই আইনের খসড়া বা বিল জমা দিয়েছে। পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য বিলে সমর্থন জানালেই সেটি পরিণত হবে আইনে।

এবং ধারণা করা হচ্ছে, বিল উপস্থাপন করা হলে পার্লামেন্টের অধিকাংশ আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দেবেন। কারণ, গত বছর যখন জনসমক্ষে মুখঢাকা বোরকা নিষিদ্ধের বিল উত্থাপন করা হয়েছিল, পার্লামেন্টের ৫১ শতাংশেরও বেশি আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।

নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘সুইজারল্যান্ডের জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই এই আইন প্রস্তাব করা হচ্ছে। কাউকে শাস্তির আওতায় আনা আইনের মূল উদ্দেশ্য নয়।’

সুইজারল্যান্ডের মুসলিমদের সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব ইসলামিক অর্গানাইজেশন ইন সুইজারল্যান্ড অবশ্য প্রস্তাবিত এই আইনের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘সাংবিধানিকভাবে নারীদের ড্রেসকোড নির্দিষ্ট করে দেওয়া নারী স্বাধীনতার পরিপন্থী একটি পদক্ষেপ।’

৪১ হাজার ২৮৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ সুইজারল্যান্ডে জনসংখ্যা ৮৬ লাখের কিছু বেশি। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ মুসলিম এবং তাদের প্রায় সবাই তুরস্ক, বসনিয়া অ্যান্ড হারজেগোভিনা এবং কসোভো থেকে আসা।

সুইজারল্যান্ডের লুক্রেন ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি একটি জরিপ চালিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, গোটা সুইজারল্যান্ডে মাত্র ৩০ জন মুসলিম নারী মুখঢাকা বোরকা পরেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *