সুদ, রেসওয়াত ও আমাদের কাবুলিওয়ালা

সুদ, রেসওয়াত ও আমাদের কাবুলিওয়ালা

সুদ, রেসওয়াত ও আমাদের কাবুলিওয়ালা

মুস্তাফা জামান আব্বাসী : হজরত ইমাম গাজ্জালির [র] লেখা বই অনেকের বাড়িতে সাজানো আছে। আবার অনেকের বাড়িতে নেই। তা হলে আর কি লাভ হল? আমি মাঝে মাঝে সেখান থেকে তুলে ধরি।

প্রাচীন খোরাসানে তুস নামে একটি জায়গা ছিল। তুসের ছিল দুই ভাগ। একটি তাহেরান আরেকটি তাওকান। ইমাম গাজ্জালি ৪৫০ হিজরী সনে তাহেরান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার উপাধি সুবিদিত, ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’। গাজ্জালি নামেই সুপরিচিত। গাজ্জাল হচ্ছে সুতার ব্যবসা, সেই থেকে গাজ্জালি। গাজ্জালির বাবা লেখাপড়া জানতেন না। তাতে কী? আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় তিনি ছিলেন আমাদের শিক্ষার আলোকপ্রাপ্ত সবচে’ বড় শিক্ষক। তার লেখা ‘মুকাশাফাতুল কুলুব’। আমার কাছে সবগুলো খণ্ড আছে। অনেকের পড়া। কোথা থেকে শুরু করব, তাই ভাবছি?

কুরআন মজিদে সুদ রেসওয়াতের কদর্যতা ও নিষিদ্ধতা নিয়ে বহু আয়াতে আলোচনা হয়েছে। হাদিসেও। হুজুর পাক [সা] বলছেন, যারা দেহের চামড়া ক্ষত করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তারা সুদগ্রহণকারী এবং সুদদাতাদের প্রত্যেকেই অভিসম্পাদের যোগ্য। ক. ব্যাভিচার, খ. কুকুরের ব্যবসা, গ. প্রাণীর ছবি আঁকা নিষিদ্ধ। হাকেম [র] বলছেন, চার শ্রেণীর লোক বেহেশ্তে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত, যারা ১. মদ্যপানে আসক্ত, যারা ২.সুদ নেয়, ৩.এতিমের মাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে, ৪. আর বাবা-মার চোখে অশ্রু ঝরায়। যা নিষিদ্ধ তাকে নিয়ে বিতর্ক করার অবকাশ নেই। যদি না মানেন, তর্ক চলবে না।

মুসনাদে আহমাদ এবং ইবনে মাজা শরিফে বর্ণিত:

হুজুর পাক [সা] বলছেন, যে রাতে আমি মিরাজ শরিফ সফর করেছিলাম, তখন সপ্তম আসমানে পৌঁছে দেখি সেখানে ঘন ঘন বজ্রপাত হচ্ছে, চারদিকে বিদ্যুতের ঘনঘটা, এবং আঁধারে সব আচ্ছন্ন। তারপর এক দল লোকের দেখা পাওয়া গেল। জিব্রাইলকে জিজ্ঞেস করাতে তিনি বললেন, এরা সুদখোর, যাদের উদর সাপ ও বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ। এ রকম অনেক ঘটনা আছে, যাতে সুদখোরদের অবর্ণনীয় দুর্দশার কথা বিধৃত। আধুনিক ব্যাংকের কথা শোনা যাচ্ছে, যেখানে সুদের কারবার নেই, কথা আছে লাভ লোকসানের। ব্যাপারটি অনেক লম্বা বিধায় ছোট করছি।

বাংলাদেশে চিনি কাবুলিওয়ালাদের, যারা টাকা ধার দেয় ও সুদ খায়। আমরা চিনি আরও অন্যান্য জাতিদের যারা গরীবদের শোষণ করে টাকা ধার দিয়ে। এগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে বলা হয়েছে। ব্যাংকের টাকা কিভাবে লোপাট হয়, আমরা জীবনে কোনদিন শুনি নি। আজকে তাও শুনতে হচ্ছে। কোথায় যাব? কার কাছে আছে এর প্রতিকার?

মু. জা. আ.
২১শে শ্রাবণ, ১৪২৬

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *