আদিল মাহমুদ এর কবিতা
স্মৃতি বিস্মৃতি
❑
সুরমা নদীর স্তব্ধতায় একা। কিছু দূরে স্নেহরেখা জেগে ওঠে, জোছনা মাখানো মেঘে, বিন্দু বিন্দু শরীরে, কুয়াশা আবর্তিত স্বপ্নে।—
বিষণ্ণ বেদনায় ছড়িয়ে রঙ-বেরঙের খন্ড খন্ড স্মৃতি। সেই বাড়ি—যেখানে আছে আম্মার তাসবি পাঠের মঞ্চ। মায়াময় সুর ভেসে আসে জানালার ফাঁক গলে, পাখিরা জানায় বাসনার কথা, বাতাসে বাতাসে ধ্বনিত আত্মার নির্বাসিত দুঃখের গান।
এসব প্রেমময় স্মৃতির কাছে মৃত্যুও হারায় নিজ যৌবন!—
সুইসাইড নোট
❑
একদিন শিক্ষিত ছেলের চাকরি হলো—মায়ের গয়না, বাবার সারাজীবনের সঞ্চয়ের শেষ সম্বলটুকু ঘুষ দিয়ে। ছেলে এখন অফিস করছে, মাসে মাইনে পাচ্ছে। দিনকাল ভালো যাচ্ছে। কিছু বছর পর—সাজানো গোছানো রঙিন সংসার ভেঙে, ভিটেমাটি বিক্রি করে, ছেলে আসে শহরে, নতুন ঘরে। বাবা মাকে পাঠিয়ে দিলো অন্য ঠিকানায়—বৃদ্ধাশ্রমে।
একদিন বৃদ্ধ বাবা মা আত্মহত্যা করে—মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়েও বিরহ বিচ্ছেদের যন্ত্রণা কঠিন হওয়ার কারণে! সুইসাইড নোটে লিখে গেলো, ‘আমরা মরতে চাইনি, বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মরীচিকা ছুতে যেয়, আমাদের স্বপ্ন চুরমার করে, আমাদের ছেলে তার বাবা মাকে মেরে ফেলেছে—হত্যা করেছে। তবে আমরা তার ফাঁসি বা কোন ধরনের শাস্তি চাই না। ক্ষমা করে দিলাম।’