ঐতিহাসিক পথযাত্রা বাংলাদেশের ইতিহাসে নবতর পদক্ষেপ: মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি

ঐতিহাসিক পথযাত্রা বাংলাদেশের ইতিহাসে নবতর পদক্ষেপ: মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি

মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি। একজন মানুষ গড়ার আদর্শ কারিগর।একসময়ের লাজনাতুত তালাবার প্রশিক্ষক। এখন তিনি টেলিভিশন ভাষ্যকার । তিনি বর্তমানে মাদরাসা আশরাফুল উলুম তেজগাঁও ঢাকার মুহতামিম। কথা বলেছেন পাথেয় টোয়েন্টি ফোর ডটকমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকর নিয়েছেন পাথেয় টোয়েন্টি ফোর ডটকমের সহযোগী সম্পাদক মাসউদুল কাদির। গ্রন্থনা করেছেন সহসম্পাদক কাউসার মাহমুদ।

পাথেয় টোয়েন্টি ফোর ডটকম: সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে আলেম জনতা ঐক্যের আহবানে আল্লামা মাসউদের যে ঐতিহাসিক পথযাত্রা চলছে এটিকে আপনি কিভাবে নিচ্ছেন।

মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি : আপনি খুব সুন্দর একটি প্রশ্ন করেছেন । আমি মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এটি খুবই প্রয়োজনীয়। আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.বা. উলামা ও জনতাকে ঐক্যের আহবান করে এ দেশের জনগণকে উলামামুখীর যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন আমি মনে করি তা বর্তমান সময়ের দাবী। কারণ ঐতিহ্যগতভাবেই আমাদের দেশের জনগণ সবসময় উলামায়ে কেরামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে আমরা জানি যে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকে নিয়ে উলামায়ে কেরাম মৌলিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। স্বাধীনতা এবং ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানের সময় জনগণ উলামায়ে কেরামের সাথে ছিলেন এবং তারাই মৌলিকভাবে উলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। এছাড়াও রাজনৈতিক সচেতনতার ক্ষেত্রে এদেশের উলামায়ে কেরামের যে ঐতিহাসিক ভূমিকা তা অনস্বীকার্য। আজকে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। এদেশ এবং এদেশের জনগণ স্বাভাবিকভাবেই উলামায়ে কেরামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই প্রেক্ষিতে সামাজিক প্রেক্ষাপটে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেব যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, সে উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। আমি মনে করি তার এই উদ্যোগ বাংলাদেশে একটি সুদূরপ্রসারী ফলাফল বয়ে আনবে। কারন,আল্লামা ফরীদ মাসঊদ বাংলাদেশের আলেমসমাজের একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবক। তিনি জাতীয় সমস্যাগুলো খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে সক্ষম হন। সেক্ষেত্রে তার ভূমিকা ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে বলেই আমি মনে করি।

পাথেয় : ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে ‘আলেম জনতার ঐক্য; জমিয়তুল উলামার লক্ষ’। এই যে স্লোগান নিয়ে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ পথযাত্রায় বের হলেন, এর সাফল্য-সফলতা কতটুকু ভাবছেন আপনি?

মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি : আমি মনে করি,প্রথম সফলতা এই যে এদেশের মানুষ এমন একটি কর্মসূচি ইতোপূর্বে আর কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। আলেম-জনতা ঐক্যের আহবান করে আল্লামা মাসঊদ যে কর্মসূচি গ্রহণ করলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি নবতর পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। এতে প্রথম যে সফলতা আসবে তা হল,এদেশের জনগণ বুঝবে আলেম ও সাধারণ জনতার ঐক্য ছাড়া ইতিবাচক কিছু আমরা আশা করতে পারিনা। আলেমসমাজ ও সাধারণ জনগণ যেকোনো বিষয়ে যখন ঐক্যবদ্ধ থাকে দেশের জন্য তাউ মঙ্গলজনক। আপনারা জানেন বাংলাদেশ একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। এদেশ লাখলাখ মসজিদ রয়েছে,আর এ মসজিদ সমূহের দায়িত্বে রয়েছে উলামায়ে কেরাম। অন্তত প্রতি সপ্তাহে একদিন হলেও উলামারা বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের সামনে কথা বলেন,তাই সাধারণ মানুষ খুব স্বাভাবিকভাবেই উলামাদের প্রতি উন্মুখ হয়ে থাকেন। ইমাম সাহেবরা যেসব কথা বলেন,তারা তা তাদের জীবনে প্রতিফলনের চেষ্টা করে থাকেন। সে হিসেবে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ আজ উলামা ও সাধরণ জনতা ঐক্যের যে আহবান জানিয়েছেন এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদকের বিরুদ্ধে যে গণসচেতনতার ডাক দিয়েছেন এ ব্যাপারে সমস্ত উলামায়ে কেরামের কর্তব্য হবে মসজিদে তাদের বয়ানে এ বিষয়গুলো উল্লেখ করা। তাহলে একটি ইতিবাচক সাড়া পড়বে বলে আমি মনে করি এবং মাদকের কারণে আমাদের যুবসম্প্রদায় যে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে,সেদিক থেকে ফিরে আসবে। সন্ত্রাস ও দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকেও এ দেশের মানুষ মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ।

পাথেয় : কেউ কেউ তো জাতীয় একাদশ নির্বাচনের আগে এই পথযাত্রাকে ভিন্নভাবে দেখছে। নির্বাচনী শোডাউন বলেও প্রচার করছে!

মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি : এটাতো একেকজন একেকভাবে নিতে পারে। যেকোনো কর্মসূচিই কারো জন্য অপেক্ষা করে না। যার যখন সময় হবে,তিনি সেইভাবে তার কর্মসূচী পালন করবেন। এ নিয়ে কারো ভাবনার পরোয়া করা যাবে না। অন্তরের খবর তো আল্লাহই ভালো জানেন।

পাথেয় টোয়েন্টি ফোর ডটকমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন মাওলানা আবু সুফিয়ান যাকি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *