পাথেয় রিপোর্ট : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তুরাগ তীরের টঙ্গী ইজতেমা মাঠে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতির জন্য কাউকে কোন ধরনের সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আগামী এক মাস টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠ প্রশাসনের দখলে থাকবে। এ সময়ের মধ্যে সেখানে কোনো অনুষ্ঠান হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১ ডিসেম্বর শনিবার তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আগামী এক মাস বিশ্ব ইজতেমা মাঠ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে উপস্থিত ছিলেন তাবলিগের আলেম উপদেষ্টা মাওলানা আশরাফ আলী, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা মাহফুজুল হক। এ ছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল থেকেই তাবলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ক্রমে সংঘর্ষের রূপ নিয়েছে। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী ও কাকরাইরের মুরুব্বী মাওলানা জোবায়ের আহমদ-এর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় দুপক্ষের সংঘর্ষে ইজতেমা ময়দান রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে মুন্সিগঞ্জের মিলকীপাড়া গ্রামের ইসমাইল মণ্ডল (৭০) নামে এক মুসল্লির মৃত্যুর হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত হন অন্তত দুই শতাধিক মুসল্লি।
পাঁচ দিনের জোর ইজতেমাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে এ সংঘর্ষ বাঁধে। আহতদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে বাড়ছে আহতের মিছিল। হাসপাতালের মেঝেতে রেখে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতো সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ৩০ নভেম্বর শুক্রবার টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘিরে তাবলিগ জামাতের দু’টি পক্ষের কর্মসূচি ঘোষণা ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা জানিয়ে নির্বাচনের আগে ওই ময়দানে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।