বিমানে অনিয়ম বন্ধ করতে হবে

বিমানে অনিয়ম বন্ধ করতে হবে

বিমানে অনিয়ম বন্ধ করতে হবে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। বিমানের ভাবমূর্তি অনেক আগে থেকেই প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা বিমানের ফ্লাইটে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ধরা পড়ার পর নিরাপত্তার প্রশ্নটিও সামনে চলে এসেছে। রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট ভিভিআইপি ফ্লাইট হিসেবে পরিচিত। এসব উড়োজাহাজ উড্ডয়নের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। ফ্লাইটে কারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদের ব্যাপারে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো খোঁজখবর নিয়ে ছাড়পত্র দিতে হয়। বিমানের নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি রয়েছে, যা কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়। কিন্তু বিমানের ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এসওপি সঠিকভাবে মেনে চলা হচ্ছে না বলেই ধারণা করা যেতে পারে।

এসওপি মেনে চললে একের পর এক ত্রুটি ধরা পড়ত না। উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি অনাকাক্সিক্ষত বস্তু উঠানো, মদ্যপ অবস্থায় কোনো কেবিন ক্রুর বিমানে ওঠার চেষ্টা, কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে ভিভিআইপি ফ্লাইটে পাঠানো এবং সর্বশেষ পাসপোর্ট ছাড়াই একজন পাইলটের দোহা গমনের ঘটনায় এসওপি বাস্তবায়নে গাফিলতির চিত্রটি প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও।

২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। বিমানটি তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে জরুরি অবতরণ করে। পরে অন্য একটি বিমান পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বুদাপেস্টে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে ‘নিরাপত্তা সিলগালা’ ছাড়া সরবরাহ করা খাবার আটকে গিয়েছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়। শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ধাতব বস্তু পড়ে থাকার কারণে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের ল্যান্ডিং বিলম্বিত হয়েছিল। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার ফ্লাইট থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে একজন ক্যাপ্টেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

আর এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে বিমানের উড়োজাহাজ নিয়ে পাসপোর্ট ছাড়াই কাতার চলে গিয়েছিলেন একজন পাইলট। সংশ্লিষ্ট পাইলট দাবি করেছেন, মনের ভুলে তিনি পাসপোর্ট রেখে গিয়েছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন ক্যাপ্টেন, যিনি দীর্ঘদিন বিমানের উড়োজাহাজ পরিচালনা করছেন, তিনি কি কোনোভাবে এই ভুল করতে পারেন? তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভিভিআইপি ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন কিভাবে এই ভুলটি করতে পারেন? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও কি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে? ভিভিআইপ ফ্লাইট পরিচালনার এসওপি কি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছিল? করা হয়ে থাকলে কী করে এই ত্রুটি কাতারে গিয়ে ধরা পড়ল?

রাষ্ট্রায়ত্ত একটি সংস্থার ভিভিআইপি ফ্লাইটে একের পর এক ত্রুটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই, বিমান তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনুক। বিশে^র সতর্ক ও নিরাপদ বিমানবন্দরের একটি হোক হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *