‘মাওলানা আবদুল মালেক সাহেবের ফাতওয়া তাবলীগী শালিসি বোর্ডের খেলাফ’

‘মাওলানা আবদুল মালেক সাহেবের ফাতওয়া তাবলীগী শালিসি বোর্ডের খেলাফ’

পাথেয় রিপোর্ট : মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া ঢাকার শিক্ষাসচিব মাওলানা আবদুল মালেক দিল্লীর নিজামুদ্দীন মারকাযের মুরুব্বী মাওলানা সাদের ইতায়াত করা জায়েয নেই বলে যে ফাতওয়া দিয়েছেন তা তাবলীগী দ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে গঠিত শালিসি বোর্ডের খেলাফ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন খুলনার জামিয়া মাদানিয়া মাদানীনগরের প্রিন্সিপাল মাওলানা ইমাদাদুল্লাহ কাসেমী। তিনি বলেন, আমরা দেখছি, তাবলীগের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজমান। এ মুহূর্তে এ দ্বন্দ্বকে কোনোভাবেই উসকে দেয়া উচিত নয়। আলেমের কাজ হলো দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা করা। মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব সে চেষ্টাটাই করতে পারতেন।

তাবলীগের দ্বন্দ্ব নিরসনে পরামর্শক কমিটির সদস্য হিসেবে সবাইকে সম্মিলিত চেষ্টা করাটা জরুরি দাবি করে মাওলানা কাসেমী বলেন, তাবলীগের কাজ দেওবন্দিয়্যাতের কাজ। এ কাজ অবশ্যই আলেমদের পরামর্শে হওয়া উচিত। তাই সর্বক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য গঠিত কমিটির প্রতি আমাদের আস্থা রাখা উচিত।

সঙ্কট নিরসনে তাবলীগ-জামাতের আলেম পরামর্শকগণ মাওলানা আবদুল মালেক সাহেবের ফাতওয়ার বিষয়ে আগে থেকে কি জানতেন? এমন প্রশ্ন রেখে মাওলানা ইমদাদ কাসেমী বলেন, আলেম উপদেষ্টাগণের পরামর্শেই  ফাতওয়ার প্রচার দেয়া যেতো।


আমরা আশা করেছিলাম, পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আলেমদের কমিটির তত্ত্বাবধানে তাবলীগে সঙ্কট নিরসন সম্ভব হবে। কিন্তু অকস্মাৎ মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব ফাতওয়া দিয়ে দেয়ায় তা আরও কঠিন হয়ে গেলো।


তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব নিসরনের আশাবাদ ব্যক্ত করে মাওলানা ইমাদুল্লাহ কাসেমী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আলেমদের কমিটির তত্ত্বাবধানে তাবলীগে সঙ্কট নিরসন সম্ভব হবে। কিন্তু অকস্মাৎ মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব ফাতওয়া দিয়ে দেয়ায় তা আরও কঠিন হয়ে গেলো।

প্রসঙ্গত, ১৬ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবার সকালে এই পরামর্শ সভা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসায় বৈঠকে ছিলেন কাকরাইল মারকাজের শূরার ১০ সদস্য ও কওমী আলেমদের পাঁচ প্রতিনিধি। বৈঠকে তাবলীগ জামাতের সঙ্কট নিরসনে ও নিরপেক্ষ ধর্ম প্রচারে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এরপর সভায় নেয়া সিদ্ধান্তগুলো গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান। বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে কাকরাইল মারকাজের সব বিষয়ে শূরার বৈঠকে নেয়া হবে সিদ্ধান্ত, দৈনন্দিন সাধারণ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে মুকিমরাও (কাকরাইলে স্থায়ীভাবে অবস্থানরত) শূরার বৈঠকে থাকতে পারবেন, বিশেষ তিনটি বিষয়ে (ক) কোন ব্যক্তি সম্পর্কে পরামর্শ (খ) অর্থনৈতিক বিষয়ক পরামর্শ (গ) সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা সংক্রান্ত পরামর্শ অথবা এ ধরনের কোন গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সাময়িক বিষয়ে পরামর্শের সময় শূরার সদস্য ব্যতীত মুকিম বা অন্য কেউ থাকতে পারবেন না, কাকরাইলে আহলে শূরা পাঁচ জন আলেমকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক ও উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণ করবেন। মনোনীত পাঁচ জন হচ্ছেন আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আশরাফ আলী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ীর মুহতামিম ও গুলশান সেন্ট্রাল (আজাদ) মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হাসান, শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল কুদ্দুছ, মারকাজুদ দাওয়াহ বাংলাদেশের আমীনুত তালীম মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক।

এ বৈঠকে ছিলেন তাবলীগ-জামাতের ১০ জন শীর্ষ দায়িত্বশীল নেতা। এরা হচ্ছেন হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আহমদ, সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা মোহাম্মদ হোছাইন, মাওলানা ফারুক, খান শাহাবউদ্দীন নাসিম, মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, মুহাম্মাদ ইউনুছ শিকদার ও শেখ নূর মুহাম্মদ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *