ইসলামের মধ্যমপন্থা ও আলেমদের মিলনমেলা ইন্দোনেশিয়ায়

ইসলামের মধ্যমপন্থা ও আলেমদের মিলনমেলা ইন্দোনেশিয়ায়

পয়লা মে তে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক সেমিনার। বিশ্বের খ্যাতিমান স্কলারগণ এতে অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। ইসলামে মধ্যপন্থাশীর্ষক এ বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন হযরতের সফরসঙ্গী ও তনয় সদরুদ্দীন মাকনুন।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটা কেমন হবে এ নিয়ে নানা রকম কৌতূহল ছিল মনের মধ্যে। এই কৌতূহল থেকেই জাকার্তা বিমান বন্দরে আমাদের স্বাগত জানাতে আসা বাংলাদেশ এ্যাম্বাসির একজনকে জিজ্ঞেসই করে ফেলেছিলাম- আসলে দেশটা কেমন? তিনি দারুণ দেশ হিসেবে আখ্যা দিলেন। ১৭ হাজার দ্বীপের বিস্ময়কর সন্বিবেশ সেখানে। মাত্র পাঁচ হাজার দ্বীপে মানুষজন থাকে। ৭৪২টি ভাষার দেশ। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতের ভাষা, রাজ্য বৈচিত্র্য আমাদের জানা। তারচেয়েও বেশি বৈচিত্র্যময় মনে হলো এই ইন্দোনেশিয়াকে।

আমরা লালসবুজের দেশের মানুষ। সবুজে সমারোহ দৃশ্য আমাদের ভালো লাগে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার প্রাকৃতিক হালটাও আমাদের মুগ্ধ করেছে। সবুজে সমারোহের পথঘাট দেখে অভিভূত হয়ে বাংলাদেশের গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা মাসঊদ দামাত বারাকাতুহুম বললেন, এ তো দেখছি বাংলাদেশের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। দারুণ সবুজাভ দৃশ্য।

আল্লাহর মর্জি অল সিলন জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান মুফতি মুহাম্মদ রেজভীর সঙ্গে বিমানে দেখা হয়। মুফতি রেজভী শ্রীলঙ্কার আলেমদের আইডল। জমিয়তের যেমন তিনি প্রধান তেমনি তাবলীগ জামাতেরও। তাবলীগের চলমান ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক থাকলেও নিজামুদ্দীনকেই তারা অনুসরণ করেন। শ্রীলঙ্কায় কোনো দ্বিমত নেই। আশ্চর্য হলাম, ইন্দোনেশিয়ায় দারুল উলূম দেওবন্দকে অতটা চর্চা করা হয় না। তবে নিজামুদ্দীনকে ঠিকই তারা তাবলীগের মারকায হিসেবে মানেন। ওখানে কোনো দ্বিমত নেই।


আশ্চর্য হলাম, ইন্দোনেশিয়ায় দারুল উলূম দেওবন্দকে অতটা চর্চা করা হয় না। তবে নিজামুদ্দীনকে ঠিকই তারা তাবলীগের মারকায হিসেবে মানেন। ওখানে কোনো দ্বিমত নেই।


ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল আমন্ত্রণে ২৯ এপ্রিল রোববার বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ-এর সঙ্গে আমিও যুক্ত হলাম। রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে কোনো দেশে গমনের একটা আনন্দ আছে।

আমরা আসলে কেন যাচ্ছি ইন্দোনেশিয়ায়। পয়লা মে ২০১৮ মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় ইসলামে মধ্যপন্থা শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করেছিল সে দেশের সরকার। ২৯ এপ্রিল রাত এগারোটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আমরা জাকার্তার উদ্দেশে রওনা দিই। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলারদের নিয়ে তিনদিনব্যাপী ইসলামে মধ্যপন্থা শীর্ষক এ সেমিনার জঙ্গিবাদেমুখর পৃথিবীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

উগ্রপন্থী হয়ে ওঠার কারণ কী? ইসলামের মূল সুর ও চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিফহাল না থাকার কারণেই সাধারণ কিছু মানুষ ইসলামের গতরকে দূষিত করছে। তাদেরকে আবার ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে। মূলত উগ্রপন্থা নয় মধ্যমপন্থাই ইসলামের মূল সুর- এটাই ছিল ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত সেমিনারের বক্তব্য।
জাকার্তা বিমানবন্দরে বাংলাদেশ এ্যাম্বাসীর প্রটোকল কর্মকর্তা হাবিব ভাই আমাদের স্বাগত জানান।

প্রেসিডেন্ট প্যালেসে
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যালেস অন্য রকম এক সবুজের সমারোহ বেষ্টিত। চতুর্দিকে সুবজের ছোপ। প্রেসিডেন্ট প্যালেসে প্রথমেই শরব ত দিয়ে আপ্যায়ন করানো হলো।

রাজপ্রাসাদে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে এত সাবলীল দেখলাম যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সবার সঙ্গে কী সৌহার্দ্যপূর্ণ ভালোবাসার বিনিময়। সবাই তার সঙ্গে কথা বলছে, মিশছে, কত কিছু জানতে চাইছে, তিনি যেনো সবারই একান্ত আপনজন।

আমি বিস্মিত হলাম। যখন শায়খে আযহার প্রবেশ করলেন প্রেসিডেন্ট প্যালেসে। প্রেসিডেন্ট একেবারে নিচে নেমে খুবই আড়ম্বরপূর্ণভাবে তাকে স্বাগত জানালেন। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হলো। প্রেসিডেন্ট সমগ্র বিশ্বের সর্বত্র ইসলামে মধ্যমপন্থার সৌন্দর্য তুলে ধরা আহ্বান জানান। সেখানে কী নোট পাঠ করেন অনুষ্ঠানের অরগানাইজিং প্রধান ড. দ্বীন শামসুদ্দীন। বক্তৃতা করেন কেবল শায়খুল আযহার আর প্রেসিডেন্ট।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের হাতে শান্তির ফাতওয়া
১ মে মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যালেসে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ‘জোকো উইডুডু’র হাতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী মানবকল্যাণে শান্তির ফতোয়া অর্পণ করেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলিকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ। তিনি বলেন, বিশ্বময় সন্ত্রাসবিরোধী কাজের অংশ হিসেবেই ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপধানের হাতে বিশ্বশান্তির ফাতওয়া তুলে দিয়েছি।
প্রেসিডেন্ট ‘জোকো উইডুডু’ তখন আল্লামা মাসউদের সন্ত্রাসবিরোধী এ পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একলাখ আলেমের স্বাক্ষর সম্বলিত এ ফতোয়াকে একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এ ফতোয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর কাছে ইসলামের প্রকৃত অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে।
আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিাবাদের বিরুদ্ধে মানবকল্যাণে শান্তির ফতওয়া ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রসিডেন্ট, অরগানাইজিং কমিটির প্রধান, মক্কার ইমাম সালে আল হুমাইদীর হাতে তুলে দিয়েছি। ইসলামে মধ্যমপন্থার এই সেমিনারকে উপলক্ষ করে বিশ্বশান্তির এই ফতওয়ার ইংরেজী কপি সবার হাতেই তুলে দেয়া হয়। বাংলাদেশ জমিয়ত প্রধানের সঙ্গে স্কলারগণই বার বার সাক্ষাত করতে আসেন। কুশল বিনিময় হয়। নিজেদের দেশের অবস্থার কথাও তুলে ধরেন তারা। বিশেষত ইটালী, মরক্কো, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের স্কলারগণ তাদের দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিাবাদের বিরুদ্ধে মানবকল্যাণে শান্তির ফতওয়া ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রসিডেন্ট, অরগানাইজিং কমিটির প্রধান, মক্কার ইমাম সালে আল হুমাইদীর হাতে তুলে দিয়েছি। ইসলামে মধ্যমপন্থার এই সেমিনারকে উপলক্ষ করে বিশ্বশান্তির এই ফতওয়ার ইংরেজী কপি সবার হাতেই তুলে দেয়া হয়

ইনসাফভিত্তিক মধ্যমপন্থা ইসলামের সৌন্দর্য
আন্তর্জাতিক সেমিনারে আল্লামা মাসঊদ দা.বা.-এর বক্তব্য
আসসালামু আলাইকুম
আমাকে সুযোগ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বর্তমান বিশ্বে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ও ধর্মনীতি যে অস্থিরতা ও ক্রমবর্ধনশীল চরমপন্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে সে প্রেক্ষিতে ‘ওয়াসাতিয়াতুল ইসলাম’ ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ ইনসাফভিত্তিক মধ্যমপন্থা ও উদার সহনশীলতার বিষয়ে প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ইসলামী চিন্তাবিদদের এই আলোচনার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এটি অতি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আশা করি এর মাধ্যমে চরম প্রান্তিকতায় আবদ্ধ বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব শান্তিময় সৌহার্দ্যপূর্ণ সহনশীল এবং ভারসাম্যপূর্ণ ইনসাফভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গঠনে আসার একটা পথ পাবে।

জনাব
মহান আল্লাহর কিতাব কুরআন মাজিদে স্থানে স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে ওয়াসাতিয়্যাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে এই উম্মতকে উম্মাতান ওয়াসাতান অভিধায় অভিসিক্ত করা হয়েছে। হাদিসে পাকেও বিভিন্নভাবে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। এগুলো বিশ্লেষণ করলে আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি যে, এর মাধ্যমে ইসলাম আমাদের চরম প্রান্তিকতা মুক্ত, সহজ-সরল, উদার ও ন্যায় ভিত্তিক সীরাতে মুস্তাকীমের সন্ধান দেয়। সময়ের অভাবে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ নেই।

প্রত্যেক বস্তু ও বিষয়েই একটা নিজস্ব মেজায ও বৈশিষ্ট্যময় প্রকৃতি থাকে যা দিয়ে উক্ত বস্তু বা বিষয়টির সম্যক পরিচয় উপলব্ধ হয়। ইসলামের ও ইসলামী শরীয়ারও নিজস্ব একটা বৈশিষ্ট্যময় মেজায ও স্বভাবজ প্রকৃতি আছে। ওয়াসাতিয়াত হলো, ইসলামের ও ইসলামী শরীয়ার অন্যতম মধ্যপন্থা স্বভাব। ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ ইনসাফভিত্তিক মধ্যমপন্থাকে বুঝতে পারলে ইসলামের সৌন্দর্য ও মাধুরিমা এবং সর্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা উপলব্ধি করা সহজ হবে।

জনাব
আমাদের প্রস্তাব হলো, বিষয়টিকে বিশ্বসমাজের সামনে আনার জন্য আরও আলোচনা, সমালোচনা ও উলামায়ে কেরামের ঘন ঘন বসা দরকার। অতি সহজ ভাষায় কুরআন, হাদিস, ফিকাহ, সীরাত ও সাহাবীগণের জীবন থেকে উদাহরণ উল্লেখ করে ছোট ছোট প্রবন্ধ-পুস্তিকা-ইশতেহার, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ব্যাপকভাবে প্রচার করা দরকার। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দিন। আমীন। ওয়াখেরু দাওয়ানা আনিল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীনন।

পয়লা মে মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশের ভাগোরে আন্তর্জাতিক গবেষণামূলক এই সেমিনারে বাংলাদেশ থেকে একমাত্র অতিথি আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বক্তৃতা করার পর অনেকেই হযরতের ইংরেজী কপি সংগ্রহ করেছেন।

হাই লেভেল কনসালটেশন অব ওয়ার্ল্ড মুসলিম স্কলার অন ওয়াসাতিয়্যাত ইসলাম শীর্ষক সম্মেলন সমগ্র পৃথিবীর শান্তির জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামী মধ্যমপন্থাকে শক্তিমান করার আহ্বান
১ থেকে ৩ মে ২০১৮ পর্যন্ত আমরা বিশ্বের আলেম উলামা একত্র হয়েছি ইন্দোনেশিয়ার উত্তর জাভার ভাগোরে অনুষ্ঠিত ‘ইসলামের মধ্যম পন্থা’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতি ক সেমিনারে।

আজ বিশ্বব্যাপী যে অস্থিরতা বিশৃঙ্খলা আর নৈরাজ্য চলছে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারিদ্র্যতা, মূর্খতা, জুলুম, শ্রেণীবৈষম্যসহ বিবিধ যে সমস্যা বিরাজ করছে সে সম্পর্কে মতবিনিময়ের জন্যেই মূলত আমাদের একত্র হওয়া।

আমরা ইসলামে বিশ্বাসী। এটি শান্তি সাম্য, ন্যায় ও সভ্যতার ধর্ম, যার মৌলশিক্ষা হলো প্রেম, দয়া, সাম্য, শান্তিবাদিতা।

আমরা স্বীকার করি যে, ‘মধ্যমপন্থা’ই হলো ইসলামের মৌলিক ও বাস্তব চিত্রণ। এর চর্চাই চলে আসছে নবী -ছাহাবা যুগ, থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর আনাচে কানাচে। এবং এটাও সত্য কথা যে, আলেম উলামাকেই আগামী প্রজন্মকে ‘মধ্যমপন্থী সভ্যতা’ বিনির্মাণের কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে।

তাই আমাদের কয়েকটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
১) ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষার আলোকে ‘মধ্যম পন্থার’ কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি ঘটানো। সেক্ষেত্রে ৭টি মূলনীতি লক্ষণীয়।
ক) সিরাতুল মুস্তাকিম তথা সহজ সরল পন্থা অবলম্বন।
খ) দায়িত্বের সঙ্গে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত কর্তৃত্ব প্রয়োগ।
গ) উদারতা তথা জীবনের সকল ধাপে মতবৈচিত্র্যকে স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
ঘ) সংস্কার তথা সংশোধনমূলক কর্মকা-ের প্রতি আগ্রহ ও সার্বজনিন সংস্কারের সদিচ্ছা।
ঙ) নেতৃত্ব তথা জনকল্যাণমূলক কর্মকা-ে অগ্রগামিতা ও নেতৃত্বদান।
চ) দেশত্ববোধ তথা স্বদেশের প্রতি সম্মান ও ভালবাসা লালন করা।
২) ইসলামী সভ্যতা ও ইতিহাসের শিক্ষা কেন্দ্র করে ব্যাক্তি ও সামাজিক পর্যায়ে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি হিসেবে ইসলামী মধ্যমপন্থার ভিত্তি স্থাপন করা।
৩) সংকল্পকে সুদৃড় করা, যেন পৃথিবী স্বাক্ষী থাকে আমরা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ইসলামী মধ্যমপন্থার উপমা স্থাপন করে যাচ্ছি।
৪) ইসলামকে বিশ্বায়নের লক্ষে ‘ইসলামী মধ্যমপন্থাকে শক্তিমান করতে মুসলিম রাষ্ট্র ও সমাজকে এগিয়ে আসার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। ন্যায়, উন্নতি, শান্তি, উদারতা, ঐক্য ও সাম্যের ভিত্তিতে একটি সমাজ বিনির্মাণ করা।

ভাবনীয় কিছু বিষয়
আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগে এ জাতীয় বড় বড় কাজ হয় না বললেই চলে। কিছু কিছু কাজ হয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়ন্ত্রণে। সেগুলোও এরকম আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করতে পারে না। প্রকৃত অর্থেই গবেষণামূলক বিশ্বের আলেমদের সঙ্গে যুগসূত্র তৈরি করে কাজ করা সময়ের দাবি।
ইন্দোনেশিয়ায় বিস্ময়ের সঙ্গে খেয়াল করলাম, পাকিস্তান-নিজামুদ্দীন নিয়ে তাদের কোনো রাখঢাক নেই। দ্বীনের কাজ হিসেবে তারা তাদের মতো করে নিজামুদ্দীনকে আগে যেমন মানতে ছিল এখন মেনেই কাজ করছে। আন্তর্জাতিক এই সেমিনারে খুব কমই ছিলেন দেওবন্দী আলেম। দেশে দেশে এই দেওবন্দী আলেমদের কার্যক্রমও বাড়ানো উচিত।

লেখক : প্রেসিডেন্ট, আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরাম

মাসিক পাথেয়, মে ২০১৮

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *