নির্বাচন আসন্ন। আমেজও শুরু হয়েছে সত্য। সোমবার গণমাধ্যমে আড়াইহাজারে উদ্ধার হয়েছে চার লাশ। এর আগের দিন ১২ লাশের তথ্য উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। বিশ্লেষকরা বিভিন্নভাবে হিসাবও তুলে ধরছেন। নির্বাচনের আগে আগে অবশ্যই নিরাপত্তা বলয়কে শক্তিশালী করতে হবে। অন্যথায় সহসাই প্রাণ হারাবে সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যে যেনো সে গল্পটা শুরু হয়ে গেছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আরো জমজমাট হবে পরিবেশ। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের সময়ও নির্ধারণ হয়ে গেছে। ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রথম সপ্তাহের যেকোনো দিন হয়তো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। গণমাধ্যমে এমন খবরই উঠে এসেছে।
বাতাসে এখন রাজনীতির গন্ধ স্পষ্ট। মাঠে নতুন লিগ মঞ্চায়নের আগে যেমন দলবদল হয় তেমনি দল অদলবদল করছে রাজনৈতিক দলগুলো। জোটে ভেঙে জোট, দল থেকে জোট আবার নিবন্ধন ছাড়া দলও বিভিন্ন জোটে গা ভাসিয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। খেলাটা এককথায় জমে উঠেছে। নির্বাচনী আমেজ এখন কেবল রাজনীতিকের ঘরে নয় সবখানে সব মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। যুক্তফ্রন্ট থেকে বর্তমানের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট-সবই গঠিত হয়েছে নির্বাচন সামনে রেখে। জোটের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে নির্বাচন সামনে রেখে। ছোট দলগুলোর এখন বড় কদর। সারা বছর গুরুত্ব না থাকলেও নির্বাচনের আগে নামসর্বস্ব ছোট দলগুলোকেও কাছে টানছে বড় দলগুলো।
আদর্শিক মিল না থাকলেও ছোট দলগুলো এখন বড় দলের জোটে ভেড়ার চেষ্টা করছে। জোটের টানাটানিতে ভাঙাগড়াও চলছে ছোট দলে। ভোটের মাঠে অস্তিত্ব নেই-এমন দল মিলে নতুন জোটও গড়া হচ্ছে। আমরা জানি, দেশে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৩৯। অনিবন্ধিত দল আছে দেড় শতাধিক। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা আট। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলে সমানসংখ্যক নিবন্ধিত দল রয়েছে। এর মধ্যে দুই দল আবার কেটেও পড়েছে। জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতৃত্বাধীন ৫৮ দলের জোটে নিবন্ধিত দল আছে তিনটি। সিপিবি-বাসদের নেতৃত্বাধীন আট দলের জোটে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা তিন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বহুল আলোচিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা মাত্র দুটি। নিবন্ধিত বাকি ১৫ দলের মধ্যে সংসদে প্রতিনিধিত্ব রয়েছে একমাত্র বিএনএফের। ইসলামী আন্দোলন, বিকল্পধারা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলন, জাকের পার্টি ও ইসলামিক ফ্রন্টের কার্যক্রম চোখে পড়লেও বাকি দলগুলোর অস্তিত্ব কাগুজে। কিন্তু নির্বাচনের আগে সব দলেরই নানামুখী তৎপরতা চোখে পড়ছে। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রভাব রয়েছে সবচেয়ে বেশি। দুই দলই ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয়। কারাগারে অন্তরীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওদিকে মাঠে ভোট চাইছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় বিএনপি আন্দোলন ও নির্বাচন-দুটিরই প্রস্তুতি রাখতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে। দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ও নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়াও প্রস্তুত বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। ওদিকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি রেখেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ।
আমরা আশাবাদি, সবশেষ বাংলাদেশের নির্বাচনে সবদল অংশ নেবে। দারুণভাবে জমে উঠবে নির্বাচনী আমেজ। উত্তেজনা বাড়ছে এবং বাড়তে থাকবে। নির্বাচনের আগে অবশ্যই রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল রাখার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনাকে ম্লান করে দিতে তৎপর থাকতে হবে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীকে। আমরা মনে করি, সবাইকে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রতি উৎসাহী হতে হবে।
ইনসার্ট
বাতাসে এখন রাজনীতির গন্ধ স্পষ্ট। মাঠে নতুন লিগ মঞ্চায়নের আগে যেমন দলবদল হয় তেমনি দল অদলবদল করছে রাজনৈতিক দলগুলো। জোটে ভেঙে জোট, দল থেকে জোট আবার নিবন্ধন ছাড়া দলও বিভিন্ন জোটে গা ভাসিয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। খেলাটা এককথায় জমে উঠেছে। নির্বাচনী আমেজ এখন কেবল রাজনীতিকের ঘরে নয় সবখানে সব মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে