চিনির বাজারে উত্তাপ

চিনির বাজারে উত্তাপ

চিনির বাজারে উত্তাপ

পাথেয় রিপোর্ট :: এবার চিনিতে আগুন। আগুনে হয়ে উঠছে চিনি। বাজারে শীতের প্রভাবে যেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না তেমনি চিনিও কুড়াতে পারেনি সেই অবস্থা। চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটে কর বাড়ানোর অজুহাতে চিনির দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজেটের পর খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। এর মধ্যে চলতি মাসে বেড়েছে ৮ টাকা।

খুচরার পাশাপাশি পাইকারিতেও চিনির দাম বেড়েছে। বাজেটের পর পাইকারিতে গত কয়েক মাসে চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে চিনির দাম আরও বাড়বে।

রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। এক মাস আগেও এক কেজি চিনির দাম ছিল ৫৮ টাকা। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আগে জুনে চিনির কেজি ছিল ৫০ টাকা। বাজেটের পর জুলাই মাসে তা বেড়ে ৫২ টাকা হয়। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বাজেটের পর চিনির দাম ধীরগতিতে বাড়লেও এখন লাফিয়ে বাড়েছে।

চিনির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী শিপলু বলেন, পাইকারিতে চিনির দাম অনেক বেড়ে গেছে। যে কারণে আমাদেরকে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিছুদিন আগেও যে চিনি ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি এখন তা ৬৫ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, কিছুদিন আগে যে চিনির বস্তা (৫০ কেজি) আড়াই হাজার টাকায় কিনেছি, এখন তা তিন হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ যোগ করে আমাদের পক্ষে ৬৫ টাকার নিচে চিনির কেজি বিক্রি করা সম্ভব না।

এই ব্যবসায়ী বলেন, চিনির দাম গত জুন থেকেই বাড়ছে। তবে জুলাই-সেপ্টেম্বরে দাম তুলনামূলক কম বাড়ে। কিন্তু হঠাৎ করে গত এক মাসে চিনির দাম অনেক বেড়ে গেছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আগে অপরিশোধিত চিনির ওপর প্রতি টনে স্পেসিফিক ডিউটি (নির্ধারিত কর) ছিল ২ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে তা ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রতি টনে কর বেড়েছে ১ হাজার টাকা। আর পরিশোধিত চিনিতে স্পেসিফিক ডিউটি ৪ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ কর বেড়েছে দেড় হাজার টাকা।

বাজেটে এই কর বাড়ানোর কারণেই চিনির দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন মিল মালিকরা। এ বিষয়ে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, প্রতি কেজি চিনির ওপর ১২ টাকা কর বাড়ানো হয়েছে। এ কারণেই চিনির দাম বেড়েছে। এছাড়া বিশ্ববাজারেও চিনির দাম বাড়তি।

বাজেটের পর চিনির দাম কম হারে বাড়লেও এখন বেশি হারে বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেটের আগে আমরা মিলগেটে প্রতি কেজি চিনি ৪৮ টাকা বিক্রি করি। এখন তা বাড়িয়ে ৫৮ টাকা করা হয়েছে। কেজিতে ১২ টাকা বাড়লে হয় ৬০ টাকা। সুতরাং সামনে চিনির দাম বাড়বে। চিনির দাম মিলগেটে ৬০ টাকা পর্যন্ত যাবে।

মিলগেটে ৫৮ টাকা কেজি হলে খুচরায় ৬৫ টাকা কেজি হওয়া স্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এখন খুচরায় কতো হবে সেটা খুচরা ব্যবসায়ীরাই বলতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *