পাথেয় ডেস্ক : অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। সদর উপজেলায় বিষমুক্ত চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন তিনি। কোনো ধরনের কৃত্রিম সার, রাসায়নিক, কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলকেই অর্গানিক বলা হয়।
জৈব সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা। দীর্ঘস্থায়ী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ইতোমধ্যে উপজেলার কয়েকশ’ কৃষক চাষাবাদ করছেন জৈব পদ্ধতিতে। এমনই একজন কৃষক সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী। আগে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে চাষাবাদ করলেও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি এখন জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। এতে সফলও হয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে গ্রীণচাষি খেতাব অর্জন করেছেন তিনি। তার উৎপাদিত সবজি বা ফসলাদির চাহিদা রয়েছে ওই এলাকায়। সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের কৃষক দুদু মিয়া। ইতিমধ্যে তার কয়েক বিঘা জমিতে শুরু করেছেন জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ। সেক্সফেরোমন ট্রাপ ব্যবহার, কোচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন তার জমিতে।
কৃষক দুদু মিয়া জানান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি রাসায়নিক সার ব্যবহার বাদ দিয়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। এতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন জৈব সারের প্রয়োজন তেমনি উৎপাদিত সবজি মানব দেহের জন্যও নিরাপদ ও সুস্বাস্থ্য রক্ষা হতে পারে। তাই রাসায়নিক সার ব্যতিরেকে জৈব সারের ব্যবহার করছেন বলে তিনি জানান।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, বাজার থেকে আমরা যেসব সবজি কিনে খাই, তার প্রায় সবগুলোর মধ্যেই বিভিন্ন কৃত্রিম সার, রাসায়নিক মিশ্রিত থাকে। এর ক্ষতিকারক প্রভাব আমাদের সবার উপর পড়ছে। কৃত্রিম সার, রাসায়নিক দ্রব্য, ফরমালিন ইত্যাদির যথেচ্ছ ব্যবহারে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, লিভারের ক্ষতিসাধনসহ নানাবিধ রোগব্যাধির প্রকোপ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।জৈবসার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল এবং সবজির উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। জৈবসার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন খরচ রাসায়নিক সারের চেয়ে শতকরা ৫০-৬০ শতাংশ কম হয়।অর্গানিক খাবার ও শাক-সবজি হয়ত সামান্য ব্যয়বহুল। সদর উপজেলায় ২৮০টি সিআইজি গ্রুপ ও ৩২০টি এসএফজি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এই কৃষক সংগঠনের মাধ্যমে কৃষকদের জৈব চাষে উঠান বৈঠক ও মাঠ দিবসের মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।