ধাওয়া খেয়ে পালিয়েছে ভারতীয় বিমান, দাবি পাক সেনাবাহিনীর
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নিয়ন্ত্রণরেখা ‘লঙ্ঘন’করে ভারতীয় বিমান তাড়া খেয়ে পালিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। তিনি বলেছেন, তিনি বলেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সময়োচিত জবাবে মোজাফফরবাদ সেক্টর দিয়ে ‘অনুপ্রবেশকারী’ ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
পাকিস্তান আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ এক টুইট বার্তায় লিখেন, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মুজাফফরবাদ সেক্টর দিয়ে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় বিমান আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের ৩-৪ মাইলের ভেতর পর্যন্ত প্রবেশ করে। তবে বিমানবাহিনীর তাৎক্ষণিক জবাবে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয় এবং উন্মুক্ত এলাকায় বোমা ফেলে যায়। কোনও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। টেকনিক্যাল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরে জানানো হবে।
এদিকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে সোমবার রাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলায় অন্তত ৩০০ জন কাশ্মীরীর মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় সামরিক সূত্রগুলো এই তথ্য দিয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারতীয় বিমানবাহিনী ওই বিমান হামলায় তারা নিহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে তারা।
সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বালাকোট, চকোটি ও মুজফফরাবাদে লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে ভারতীয় বাহিনী।
ওই হামলার পর সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এদিকে এই হামলার পর উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল উপস্থিত রয়েছেন।
অন্যদিকে পাকিস্তানেও নিরাপত্তা বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিসহ উচ্চপর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে লেজার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার সাহায্যে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে।
সূত্রের বরাত দিয়ে তারা জানাচ্ছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবেই এই অভিযান চালানো হয়। সোমবার বালাকোট সেক্টর থেকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান। এরপর বালাকোট, চাকোটি এবং মুজফফরাবাদে জইশ-ই-মুহাম্মদের তিনটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে ভারত। গুঁড়িয়ে দেয়া হয় জইশের কন্ট্রোল রুম আলফা-৩।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত কাশ্মীরীরা ভারত-পাকিস্তানের মতো দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের পুতুল হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। যখন কাশ্মীরী মারা যায় তখন তাদেরকে জঙ্গি বলা হয়। স্বাধীনতাকামী তাদেরকে কেউ বলে না। ১৯৪৭-এর পর থেকে এই বৈষম্য দুই দেশের কোনো সরকারই রুখতে পারেনি।