পটিয়ার দশ মনীষী : একটি সরল চেষ্টার কথা

পটিয়ার দশ মনীষী : একটি সরল চেষ্টার কথা

পটিয়ার দশ মনীষী : একটি সরল চেষ্টার কথা

মাসউদুল কাদির : ২০০৬ সালে দাওয়ারায়ে হাদিস পড়তে গিয়েছিলাম জামিআ ইসলামিয়া পটিয়ায়। এত বড় মাদরাসা এর আগে আর আমি কখনো দেখিনি। নিজের বিস্ময়ের একটা অবস্থা থেকেই মুফতি আজিজুল হক রহ. থেকে শুরু করে আল্লামা ইসহাক আল গাজী রহ. পর্যন্ত অনেক মনীষীকে একটা ডামি গ্রন্থে আনার চেষ্টাটা করেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, একটা কিছু করে যাই। পরে এ সূত্র থেকে আরও অনেক কাজ হয়তো হবে। প্রচ্ছদটি ছিল প্রথম সংস্করণের।

এরপর আরও সংস্করণ হয়েছে। তবে আমার কাছে কোনো কপি নেই। ভালো থাকবেন সবাই। পটিয়া নিয়ে আরও কিছু কাজ হতে পারে….

এ গ্রন্থটিকে এ যাবৎ অনেক বড় বড় লেখক রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের প্রতি আমার অনেক কৃতজ্ঞতা অবশ্যই। পাশ কেটে গেলে কিছুই করা ছিলো না। আবার অনেকের সারে তাজ, যথেষ্ট সম্মান কুড়িয়ে ধন্য এমন মানুষও সম্পূর্ণ প্যারা হুবহু নিজের বইয়ে তুলে দিলেও স্বীকার করেননি। কোথাকার কোন্ চোকরা বই লিখেছে, তার আবার রেফারেন্স কী? আমি হেসেছি। বরাবরই হেসে এমন অনেক ঘটনা শুনেও না শোনার ভান করে থেকেছি। এরমধ্যেও একটা প্রশান্তি আছে বৈকি। ঢাকার একজন গবেষক বল্লেন, একজন সিনিয়র ওরকম মেরে দিয়েছেন। সেদিন শুনলাম, আমার পুরো বইটাই মেরে দিয়েছেন মান্যবর একজন প্রকাশক। আমি তার সাহস দেখে অবাক হয়েছি। তার বুকের হাড্ডিটা কত শক্ত? একবারও চিন্তা করেনি, কী হতে পারে। আমার বই, অন্যের নামে ছেপে দিব্যি বিক্রি করে যাচ্ছে। তা-ও আবার আমার ভাঙাচোরা কথা সাহিত্য। কী হতো অনুবাদ করলে তা-ই এখন ভাবছি।

নিঃসন্দেহে তাদের আমি মহৎ বলবো, যারা সামান্য তথ্য নিয়ে রেফারেন্সে উল্লেখ করেন। তারা আসলেই কাজ করতে চান। ধোঁকা বা ফাঁকি দিয়ে সাহিত্য করতে চান না।

নিঃসন্দেহে তাদের আমি মহৎ বলবো, যারা সামান্য তথ্য নিয়ে রেফারেন্সে উল্লেখ করেন। তারা আসলেই কাজ করতে চান। ধোঁকা বা ফাঁকি দিয়ে সাহিত্য করতে চান না। তাদের আমি অভিনন্দন জানাই।

আজকে পটিয়ার সেই সম্মানিত উস্তাদগণকে খুব মনে পড়ছে, যারা গ্রন্থটি তৈরীর পেছনে অনেক সহযোগিতা করেছেন। পটিয়ায় আমি একটা ‘প্রাণ’ উড়াউড়ি করতে দেখেছি। আমার ঢাকার জীবনে সেটা অনুপস্থিত ছিলো। আমি ভাবতেই পারিনি, পা বাড়ালেই গাড়ি শব্দ নেই, কোনো হুইসেল নেই। কী প্রাণময়তা। আস্তে কথা বললেই পাশের জন শুনতে পায়। অস্থির রাজধানীর মানুষেরা এই সেই প্রাণ কখনো খোঁজে পায়নি, পাবেও না।

এ গ্রন্থটি পটিয়ায় না করলে আমার হয়তো ওই বছরটা কাটানোও কষ্ট হতো। অকস্মাৎ রাজধানীর বাইরে অত সময় কাটানোর অভ্যেস ছিলো না। আমার প্রিয়তম উস্তাদদের যারা ইন্তেকাল করেছেন আল্লাহ তাদের কবরকে নূর দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিন। যারা বেঁচে আছেন সবাইকে সুস্থতার সঙ্গে নেক হায়াত দান করুন। আমীন।

লেখক : সাংবাদিক

পটিয়ার দশ মনীষী

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *