ঝুঁকিতে গণমাধ্যকর্মীরা
বাক স্বাধীনতার সুরক্ষা প্রয়োজন
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম :: দেশে বিদেশে সবখানে এখন গণমাধ্যকর্মীরা হুমকি মাথায় নিয়েই কাজ করেন। বিশেষত মাদক ব্যবসায়ি ও অসৎ রাজনীতিবিদগণ গণমাধ্যমকর্মীদের শত্রু। সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ এই সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। দস্যুতাবৃত্তির সুফল গায়ে গতরে মেখে চলছে মিডিয়া বা গণমাধ্যম। সাংবাদিক তাই হুমকির মধ্য দিয়েই জীবনের বাতিঘরে আলো জ্বেলে যাচ্ছেন। কেবল বাংলাদেশে নয়, বিদেশেও একই অবস্থা। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকতা সত্যিকার অর্থেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে বৈরী অবস্থার কারণে। বিশেষত স্বৈরশাসনের অধীনে সাংবাদিকরা নিগৃহীত হচ্ছে চরমভাবে।
বিশ্বজুড়ে এ বছর অন্তত ২৫০ জন সাংবাদিককে জেলের ঘানি টানতে হয়েছে। কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকগোষ্ঠীর জিঘাংসার শিকার হচ্ছে সাংবাদিকরা। চলতি বছর সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানোর ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়েছে চীন। আরেক কর্তৃত্ববাদী শাসক ‘নব্য সুলতান সুলায়মান’ এরদোগানের শাসনাধীন তুরস্কের রেকর্ড ভেঙে শীর্ষে উঠে এসেছে বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশটি। চলতি বছর ৪৮ জন সাংবাদিককে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে কমিউনিস্ট শাসিত চীন। সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের বার্ষিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, চীনের জিন জিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে তা গোপন রাখতে সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের বিষয়টি কঠোরভাবে দমন করা হচ্ছে। এ ঘটনা সামনে আসার পরই তালিকার শীর্ষস্থানে গেল চীন।
স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর থেকেই সাংবাদিকদের চাকরি হারানো এবং নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে তুরস্ক। নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকগোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান দমনপীড়নের ফলে নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করে সিপিজে। তাদের অভিযোগ যাদের জেলে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী অথবা ভুয়া খবর প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাংবাদিকদের জেলে পাঠানো হয়েছে, সৌদি আরব, মিসর, ইরিত্রিয়া, ভিয়েতনাম ও ইরানসহ আরও কিছু দেশে।
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে গণতন্ত্রহীনতা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে। তুরস্কে দৃশ্যত গণতান্ত্রিক চালু থাকলেও উগ্র ইসলামিস্টরা ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তারা প্রতিপক্ষ দমনে সদা সক্রিয়। গণচীনে গণতন্ত্রের সংকট চলছে মাও সে তুংয়ের সময় থেকে। বর্তমানে গণনিপীড়ন কিছুটা হ্রাস পেলেও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও যে নিগৃহীত হচ্ছে এক বছরে ৪৮ জন সাংবাদিককে জেলে ভরার ঘটনা তারই প্রমাণ। এ স্বেচ্ছাচারিতার অবসানে শুধু সাংবাদিক নয়, সারা দুনিয়ার গণতন্ত্রকামী মানুষকে সোচ্চার হতে হবে।