২৮শে মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৩ হিজরি
আমিনুল ইসলাম কাসেমী
ওয়াজ মাহফিলে ইসলাহী আলোচনা দ্বারা মানুষ বেশী উপকৃত হয়। যে যতই গরম বয়ান করুক, কিন্তু সাধারণ জনতা বেশী ফায়দা হাসিল করেন ইসলাহী আলোচনা দ্বারা। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মপ্রাণ। দ্বীন ইসলামকে ভালবাসে। তারা ইসলামী জলসার কথা শুনলে সেখানে ভীড় জমায়। বক্তা যেই হোক, স্রোতা কিন্তু সেখানে হাজির। দল বেঁধে সেখানে চলে যায়। বক্তা যা বলে শুনতে থাকে। কোন ধরনের চ্যু- চেরা কেউ করে না।
আমাদের দেশে এখন কত ধরনের বক্তা, সব ধরনের বক্তার ওয়াজ শোনে মানুষ। স্রোতা একই। কিন্তু বক্তা বিভিন্ন মত- পথের হতে পারে। তাই বলে বাছাবাছি করেনা তারা।
বক্তা রাজনীতি করুক, বক্তা পীর হোক, বক্তা যে কোন সিলসিলার হোক, স্রোতারা সব জায়গাতে আছে। সেখানে গিয়ে বক্তাকে সাহস জোগায়। বক্তাকে সমর্থন করে থাকে।
এই রকম স্রোতা মনে হয় বাংলাদেশেই। যেখানে সব ধরনের বক্তার মাহফিলে হাজির হচ্ছে। ঐ মামুনুল হক সাহেব বলেন, হাফিজুর রহমান সিদ্দিক বলেন, এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন, সব জায়গাতে পাওয়া যাবে দ্বীনদার ঈমানদার স্রোতা। একই স্রোতা কিন্তু তারা সব ধরনের মাহফিলে শরীক হচ্ছে। সব মাহফিলে গিয়ে বক্তাকে সাহস জোগাচ্ছে।
এজন্য একটা মোক্ষম সুযোগ আমাদের। বক্তাগণ যদি মাহফিলে বসে মানুষের সংশোধনের কথা বেশী বলেন, তাহলে কিন্তু জনতার ফায়দা বেশী হয়।তাছাড়া হেকমত – কৌশল এবং মাওয়ায়েজে হাসানা দ্বারা মানুষকে দ্বীনের পথে আনার দাওয়াত দেওয়া বেশী জরুরি। অনেকে এখানে ভুল করেন। হেকমত অবলম্বন করেন না। আবার মাওয়ায়েজে হাসানা ব্যবহার করেন না।
হেকমত- কৌশল এবং মাওয়ায়েজে হাসানা না থাকার কারণে অনেকে নানান সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নানান জায়গাতে। কোথাও ওয়াজ মাহফিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্রোতারা আলেমদের সোহবত থেকে মাহরুম হচ্ছে।
বেশী সমস্যাতে পড়ছেন মাহফিল কতৃপক্ষ। বহু চেষ্টা – তদবির করে, বহু অর্থকড়ি ব্যয় করার পর যদি মাহফিল না হয়, এর থেকে কষ্টের আর কিছু থাকেনা। মন ভেঙে যায় ইন্তেজামিয়া কমিটির।
সুতরাং ওয়াজ মাহফিলে ইসলাহী আলেচনার বিকল্প নেই। মানুষের রুহের খোরাক এখন ওয়াজে ইসলাহী বয়ান। যার দ্বারা হৃদয় গলে যাবে। দুচোখ থেকে অশ্রু বের হতে থাকবে। মানুষ আল্লাহ প্রেমে হারিয়ে যাবে।
প্রতিটি মাহফিলে এখন এটা চাই। এছাড়া অন্য কিছু ভাবা যায় না। আপনাদের গরম কোন বয়ান যদি দিতে হয়, সেটার জন্য রাজনীতির মঞ্চ বেছে নিলে ভাল হয়। সেখানে যত পারেন তত গরম। কিন্তু ওয়াজ মাহফিলকে বিতর্কের উর্ধে রাখুন। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : কলামিস্ট