১১ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২১শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

আমলের ক্ষেত্রে তাকওয়া অবলম্বন মুমিনের প্রধান উদ্দেশ্য : ইমাম কাসেম

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রে তাকওয়া অবলম্বন মুমিনের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন হযরত কাসেম নানুতাবী (রহ.) এর বংশধর, ইকরা টিভি ও আল খায়ের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা ইমাম কাসেম রশিদ আহমদ।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) তাড়াইলের বেলঙ্কার জামিয়াতুল ইসলাহ ময়দানে তিন দিনব্যাপি আয়োজিত ইসলাহী ইজতেমার দ্বিতীয় দিন রাত ৯টায় ইসলাহী বায়নে এসব কথা বলেন ইমাম কাসেম।

ইসলাহী ইজতেমায় উপস্থিত হওয়ার উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত—তা জানাতে গিয়ে ইকরা টিভির চেয়ারম্যান বলেন, এই ইসলাহী ইজতেমায় আসার একটাই মাকসাদ, সেটা হলো আত্মার সংশোধন করা। এখানে এসে যে নিজের আত্মার সংশোধন করলো, সে প্রকৃত সফলকাম হয়ে গেলো।

তিনি বলেন, আমরা এখানে আলেমদের থেকে যত কথা শুনি, যত বয়ান শুনি—এসব কিছুর একটাই উদ্দেশ্য, সেটা হলো আত্মাকে সংশোধন করা। তাই আমরা যদি ইজতেমা থেকে যাওয়ার আগে আত্মাকে সংশোধন করতে পারি, তাহলে আমাদের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।

কীভাবে নিজেকে সংশোধন করা যায় তা জানাতে গিয়ে আল খায়ের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ইসলাহে নফসের অনেক পদ্ধতি রয়েছে। একটি পদ্ধতি হলো, নিজের সব আমল যেন ঠিক হয়ে যায় সে জন্য চেষ্টা করা। প্রতিটি আমলের মধ্যে তাকওয়ার আছর থাকবে এইভাবে আমলকে পালন করা।

তাকওয়া কাকে বলে সে সম্পর্কে তিনি বলেন, তাকওয়ার হলো, মানুষের মনের এমন এক প্রবৃত্তি, যা মুমিন ব্যক্তিকে সর্বদা আল্লাহর ভয়ে ভীত রাখে। এছাড়াও প্রতিটি আমল আল্লাহ তাআলা যেভাবে পালন করতে বলেছেন এবং তাঁর রাসূল যেভাবে পালন করে দেখিয়েছেন ঠিক সেভাবেই পালন করাকে তাকওয়া বলা হয়।

ইমাম কাসেম বলেন, তাকওয়ার শাব্দিক অর্থ হলো বেঁচে থাকা এবং ভয় করা। তবে এক্ষেত্রে ভয়ের চেয়ে মুহাব্বাতের পাল্লায়ই ভারি থাকে। নবিজির বলা প্রত্যেক ভালো কাজ অনুসরণ করাই আল্লাহকে ভালোবাসার নামান্তর। এটা থেকে বুঝা যায় তাকওয়ার এক অর্থ আল্লাহকে মুহাব্বাত করা।

সত্য কথা বলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে হযরত কাসেম নানুতাবী (রহ.) এর এই বংশধর বলেন, আমাদের জীবনের আশি ভাগ সমস্যা হয় আমাদের জবানের কারণে। আমরা যদি আমাদের জবানকে সংবরণ করতে পারি তাহলে আমাদের জীবন আনন্দময় হয়ে উঠবে।

বয়ানের শেষ পর্যায়ে ইমাম কাসেম বলেন, আমরা যদি আল্লাহকে ভয় করি এবং সত্য কথা বলি তাহলে আমাদের সব আমল ঠিক হয়ে যাবে। আমল দ্বারা এখানে শুধু নামাজ, রোজা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। আমলের দ্বারা এখানে একজন মানুষের সব ধরণের কাজ উদ্দেশ্য। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদের সব আমল ঠিক করে দেন।

মাওলানা ইমাম কাসেম রশিদ আহমদের বয়ান শেষে কিতাবী তালিম করেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

কিতাবী তামিল শেষে জিকিরের ফজিলত বর্ণনা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ আল্লাহ ও তাঁর নামের জিকির। আল্লাহ নামের জিকিরের স্বাদ কখনো কমে না, বরং যত বেশি করবে ততো স্বাদ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আল্লাহর নামের জিকিরে কখনো বিরক্তিও আসে না। যে ব্যক্তি যত বেশি জিকির করবে সে আল্লাহর কাছে ততো প্রিয় হতে থাকবে। আমরা দুআ করি, আল্লাহ আমাদেরকে বেশি বেশি তাঁর নাম লওয়ার তাওফিক দান করুন।

এরপর বাদ এশা মাহফিলে আগত মুসল্লীদের মাঝে আগ্রহীরা মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী (রহ.) এর এই খলীফা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। বায়আত শেষে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা ও দেশ-জাতি এবং মুসলিম উম্মাহের জন্য শান্তি-মুক্তি কামনা করেন তিনি।

শেয়ার করুন


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ১৯৮৬ - ২০২৩ মাসিক পাথেয় (রেজিঃ ডি.এ. ৬৭৫) | patheo24.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com