১৫ই আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ১৬ই মহর্রম, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নিয়্যত বিশুদ্ধ ও খাঁটি না হলে আল্লাহ তাআলার কাছে কুরবানীর কোনো মূল্যই থাকে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়া বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
তিনি বলেছেন, কুরবানীর পশুর গোশতের পরিমান বা মূল্য কোনোটাই আল্লাহ তাআলা দেখবেন না। আল্লাহ তাআলা কেবল দেখবেন নিয়্যতের মাঝে বিশুদ্ধতা আছে কিনা। নিয়্যত বিশুদ্ধ ও খাঁটি না হলে আল্লাহ তাআলার কাছে কুরবানীর কোনো মূল্যই থাকে না।
শুক্রবার (১ জুলাই) ইকরা ঝিল মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার বয়ানে এসব কথা বলেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
আল্লাহ তাআলা লোক দেখানো কুরবানী কবুল করেন না জানিয়ে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সমাজে লোক দেখানো কুরবানী করে দুই শ্রেনীর লোক। এক শ্রেনীর লোক আছে এমন, যাদের অনেক টাকা, তারা বেশী টাকা দিয়ে কুরবানী করে প্রতিযোগিতা করে। আরেক শ্রেনী আছে, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব-ই না। কিন্তু তারা ধারকর্জ করে হলেও কুরবানী করে। যাতে মানুষ কিছু বলতে না পারে। কখনও পরিবারের চাপে পড়ে, সন্তানদের শখ পূরণ করতে কুরবানী করে। এই দুই শ্রেনীর কারো কুরবানীই আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন না। কুরআন কারীমে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, পশুর রক্তমাংস কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।
পশু কুরবানীর আগে নিজেদের কুপ্রবৃত্তিকে কুরবানী করা জরুরী উল্লেখ করে ফিদায়ে মিল্লাত রহ.-এর এই খলীফা বলেন, আল্লাহ তাআলা লোক দেখানো কুরবানী কবুল করেন না। আল্লাহ তাআলা দেখেন নিয়্যতের পরিশুদ্ধতা বা তাকওয়া আছে কিনা? তাকওয়া থাকলে একটা ছোট্ট খাসি বা বকরী কুরবানী দিলেও আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন। আর তাকওয়া না থাকলে লাখ লাখ টাকা দিয়ে পশু কুরবানী করলেও আল্লাহ কবুল করেন না।
শরীকানা কুরবানীর ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, কুরবানীর পশুর মাঝে নিয়্যতের বিন্দুমাত্র অশুদ্ধতা হলেও কুরবানী কবুল হবে না। আমাদের সমাজে কয়েকজন মিলে একটা পশু কুরবানী করার রীতি প্রচলিত আছে। এক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা চাই। কারণ একজনের নিয়্যতে বিন্দুমাত্র সমস্যা থাকলে অন্যদের কুরবানীও কবুল হবে না।
সহীহ নিয়্যতে কুরবানী করার ফজিলত সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই আধ্যাত্নিক রাহবার বলেন, সহীহ নিয়্যতে কুরবানী করলে কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলা কুরবানীর পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে সওয়াব দান করেন।
কুরবানীর পশুর মাংস ফ্রিজে জমিয়ে না রাখার আহ্বান জানিয়ে শাইখুল ইসলাম আল্লামা মাসঊদ বলেন, ইসলামের নিয়ম হলো, যখন দেশে দুর্ভিক্ষ থাকে, তখন তিন দিনের বেশি গোশত জমা করে জায়েজ নাই। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় আরও বেশি দিন গোশত রাখা বৈধ রয়েছে।