আদিল মাহমুদ
এখানকার ছবির মত গ্রামে, জানালা খুলে বসে আছে শিক্ষাজীবন। স্মৃতির বনের পাশ দিয়ে যে রঙিন মেঠো পথ চলে গেছে, তার শেষ মাথায় সুনসান দাঁড়িয়ে একটি ছেলেবেলা। কুয়াশা ভেজা শিথানের নির্জনতার বুকে জমা জিকিরের সমস্ত মুগ্ধ সংগীত, শিশির ফোঁটায়ও আল্লাহ আল্লাহ শব্দ। আমি যার স্বরলিপি লিখে রেখেছি বেলংকার দুর্বাঘাসে।
এখানকার পথের উড়নচন্ডী ধুলোয় লেপ্টে আছে আত্মার খোরাক। আহাম বয়ানের গোঁড়ো গোঁড়ো মধু। রুপালী আধুলির ছকে আঁকা ইসলাহের যাবজ্জীবন। রুহানি চুমুর হিমশীতল আগুন পরশ, ঠোঁটের জল, প্রাণবন্ত ছায়াতল। ক্রমশই রহস্যপূর্ণ হয়ে ওঠে তামাদ্দুন-তাজকিয়ার খোদাভীতি, নৈঃশব্দ্যের নিঃশ্বাস।
এখনকার চারাগাছগুলো প্রাণভরে শ্বাস নেয় ওলী-আল্লার হিল্লোলে। নূরের জোছনা সৌন্দর্যের অবগাহনে সিক্ত হয় নয়ন। তাহাজ্জুদের অন্ধকারে সামিয়ানার নিচে হামদের সুরে মাওলা মাওলা ডাকের রোনাজারি। ভোরের মৃদুমন্দ হাওয়ার তালে বাজে ছয় তাসবির শব্দ। মৌন হয়ে বসে মায়াভরা রহমতের স্বপ্ন বুনে গ্রাম্যো মাতব্বর।
এখনকার হিম শীতল বাতাসের আলতো ছোঁয়ায়, মোহ, মায়া, বন্ধন ছিন্ন করে অনন্তের যাত্রাপথে চলে আত্মা। অশান্ত সমুদ্র স্ফীত করতলে, দুঃখ, কষ্ট, জরাজীর্ণ ভুলে, তাজা ঈমানের ঘ্রাণ নেয় দুরুদের নূরে। অতুলস্পর্শী শীতল ছায়ায়, অধীর মায়ায়, ঐশী প্রেমের আনন্দে, মেধার স্ফুরণে, হৃদয়ের উল্লাসে, অহমের উপশমে, মশগুল ইবাদতে।
এখানকার বৃদ্ধ মুখগুলো পূণ্যে গলে যায় রোদ বিকালে মৃত ডুমুরের নীরবতায়। হেদায়াত পায় অবিরাম জান্নাতি বাতাসে। বরকতের বর্ষণে, পাপ-পঙ্কিল থেকে মুক্ত হয়ে, প্রেম বেদনা বিধুরতার গভীর মহাসমূদ্রের এক টুকরো খোদায়ী আলোর দিকে কিছুক্ষণ তাকায়, বলে— এমনভাবে বেঁচে থাকা শান্তি ও আরামের, আনন্দ ও আমলের।
***
নোট: নেক ও এক হওয়ার স্লোগান নিয়ে, আল্লাহ ও নবীজী (সা.) এর পথে আসার আহবান জানিয়ে, মানুষের হৃদয়কে ঈমানের স্বাদে তৃপ্তিময় করা ও নৈতিক উন্নয়নের দাওয়াত নিয়ে—বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়া বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী (রহ.) এর খলীফা, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ (দা.বা.) আয়োজিত কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বেলংকার ইসলাহী ইজতেমার আমলী জিন্দেগী গঠনের কাজকর্ম অবলম্বনে লিখিত।